ছেলের সেঞ্চুরিতে বাবার চোখে আনন্দের অশ্রু
মেলবোর্ন টেস্টে ২১৭ রানে সাত উইকেট হারিয়ে ফলো-অনে পড়ার শঙ্কায় ছিল ভারত। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট শতক হাঁকিয়ে দলের হিরো হয়ে উঠলেন নিতিশ কুমার রেড্ডি। তাকে দুর্দান্ত সঙ্গ দিয়ে ৫০ রান করেন অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দর।
মেলবোর্ন টেস্টে ২১৭ রানে সাত উইকেট হারিয়ে ফলো-অনে পড়ার শঙ্কায় ছিল ভারত। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট শতক হাঁকিয়ে দলের হিরো হয়ে উঠলেন নিতিশ কুমার রেড্ডি। তাকে দুর্দান্ত সঙ্গ দিয়ে ৫০ রান করেন অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দর। অষ্টম উইকেটে তাদের ১২৭ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটিতে অস্ট্রেলিয়াকে হতাশ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত, যাদের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে।
শনিবার মেলবোর্ন টেস্টের বৃষ্টিবিঘ্নিত তৃতীয় দিন শেষে ভারত ৩৫৮ রানে অপরাজিত অবস্থায় ১১৬ রানে পিছিয়ে ছিল। ২১ বছর বয়সী নিতিশ কুমার রেড্ডি ১০৫ রান করে অপরাজিত রয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেঞ্চুরি করা ভারতের তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার তিনি।
বিশাখাপত্তমের নিতিশের আন্তর্জাতিক অভিষেক গত অক্টোবরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে, এবং টেস্ট অভিষেক হয় চলতি বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে। লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেও তিনি সিরিজের ছয় ইনিংসে ৭১ গড়ে ২৮৪ রান করেছেন, যা ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ রান।
গতকাল, শেষ সেশনে ওয়াশিংটন ৫০ রান করে আউট হন এবং এরপর জাসপ্রিত বুমরা শূন্য রানে ফিরে আসলে ৯৯ রানে থাকা নিতিশের সেঞ্চুরি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তবে প্যাট কামিন্সের ওই ওভারের শেষ তিন বল নিরাপদে কাটিয়ে দেন নিতিশ, এবং পরে স্কট বোল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তারপর নিতিশ ব্যাটের ওপর হেলমেট রেখে হাঁটু গেড়ে বসে উদ্যাপন করেন। গ্যালারিতে নিতিশের বাবা মুতিয়ালা রেড্ডির চোখে আনন্দাশ্রু দেখা যায়।
নিতিশ নিজে জানালেন, "আমার সাফল্যের গল্প আসলে বাবার আত্মত্যাগের। শৈশবে আমি ক্রিকেট নিয়ে তেমন সিরিয়াস ছিলাম না, কিন্তু আমার বাবা চাকরি ছেড়ে আমাকে ক্রিকেটার বানানোর জন্য সব কিছু ঝুঁকি নিয়েছিলেন। একদিন, যখন আমি দেখলাম আমাদের আর্থিক সমস্যা চলছে, তখন প্রথম বুঝতে পারলাম যে, আমি কিছু একটা করতে হবে। তখন থেকেই আমি ক্রিকেটে সিরিয়াস হলাম।"
মুতিয়ালা রেড্ডি, যিনি শুধুমাত্র স্ত্রীর সাথে এবং মেয়েকে নিয়ে এই বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির চতুর্থ টেস্ট দেখতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন, গর্বিত কণ্ঠে বলেন, "অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে তাদের মাটিতে নিতিশের প্রথম সেঞ্চুরি। এটা অবশ্যই একটি বিশেষ দিন।"
নিতিশের সেঞ্চুরির পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দিনের খেলা অকাল সমাপ্তি ঘটে আলোকস্বল্পতায়।
What's Your Reaction?