‘প্রশাসন ও ২৫ ক্যাডার সরকারকে জিম্মি করেছে’
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া মন্তব্য করেছেন, প্রশাসন এবং ২৫ ক্যাডার সরকারকে নিজেদের হাতে নিয়েছে, ফলে জনসেবা এবং দাপ্তরিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীরা আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার কোনো আইনগত অধিকার নেই এবং এটি সরকারি চাকরির আচরণ বিধিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া মন্তব্য করেছেন, প্রশাসন এবং ২৫ ক্যাডার সরকারকে নিজেদের হাতে নিয়েছে, ফলে জনসেবা এবং দাপ্তরিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীরা আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার কোনো আইনগত অধিকার নেই এবং এটি সরকারি চাকরির আচরণ বিধিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থি। যদি তারা আইন ও বিধি উপেক্ষা করে আন্দোলন ও পাল্টাপালটি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকে, তবে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ক্যাডার কর্মকর্তারা যদি সার্ভিসের শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেন, তবে অন্যান্য কর্মচারীরা কী শিখবে?
ফিরোজ মিয়া উল্লেখ করেন, তারা ট্রেড ইউনিয়ন বা সিবিএ (কালেক্টিভ বার্গেইনিং এজেন্ট)-এর ভূমিকা পালন করতে পারেন না, অথচ তাদের আচরণ সিবিএ সদস্যদের মতো। তিনি সব ক্যাডার সংগঠনকে সংযত আচরণ করার আহ্বান জানান।
বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) প্রশাসন এবং ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভিন্ন দাবি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বর্তমানে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে ব্যস্ত এবং এর ফলে জনগণের সেবা ও দাপ্তরিক কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের কর্মকর্তারা সচিবালয়ে বড় ধরনের শোডাউন করেছেন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধানকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা নিজেদের দাবি আদায়ে সংবাদ সম্মেলন, কলমবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন, এবং আগামী ৩ জানুয়ারি খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সরকারের সামগ্রিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যার ফলে নাগরিক সেবা ও দাপ্তরিক কাজের গতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, সরকার জনসেবা নিশ্চিত করতে সতর্ক রয়েছে এবং এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, ২৫ ক্যাডারের সমন্বয়ক ড. মফিজুর রহমান বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কারণে তারা পরাধীনতা অনুভব করছেন এবং এই আন্দোলনের কারণে জনসেবা ও দাপ্তরিক দায়িত্ব বিঘ্নিত হচ্ছে না। তাদের দাবি, সরকার তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলি মেনে নিলে তারা আন্দোলন বন্ধ করবেন।
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দাবি হলো, তাদের ওপর কোনো ধরনের সার্জারি বা কাটাছেঁড়া আরোপ করা যাবে না, এবং তারা যে কোনো ধরনের বহিরাগতকে প্রশাসনে ঢুকতে দিতে রাজি নন। এছাড়া, পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সম্মানজনক অবস্থান প্রদান এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৫০:৫০ আনুপাতিক হার বাস্তবায়ন করার দাবি করেছেন তারা।
এই বিষয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা কোনো নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেননি, কিন্তু ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা মানববন্ধন, কলমবিরতি ও মহাসমাবেশের মতো কর্মসূচি পালন করছেন।
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, উপসচিব পদে কোটা বাতিল করা এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা বাতিল করা। অন্যদিকে, ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রশাসন ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০:৫০ আনুপাতিক হার সমর্থন করছেন এবং লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতির সুপারিশ করছেন।
এ বিষয়ে সাবেক সচিব একেএম আবদুল আউয়াল মজুমদার মন্তব্য করেছেন, ২৫ ক্যাডারের আন্দোলন সম্পূর্ণ বেআইনি এবং তারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। এর ফলে জনসেবা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং সরকারের উচিত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।
What's Your Reaction?