বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রদানের চারটি শর্ত
বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক। তবে এই ঋণ দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও কার্যকর করতে ব্যবহার করতে হবে।
ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক। তবে এই ঋণ দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও কার্যকর করতে ব্যবহার করতে হবে। এ লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক চারটি শর্ত আরোপ করেছে। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠকে এসব শর্ত তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক প্রস্তাবিত ঋণের মধ্যে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে নীতি সংস্কারের কাজে। আশা করা হচ্ছে, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই অর্থ বাংলাদেশ পাবে। তবে ঋণ পেতে হলে বাংলাদেশকে কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ পুনরুদ্ধার করতে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠন করা, ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী নির্ধারণের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন করা এবং ফরেনসিক অডিট পরিচালনার কাঠামো নির্ধারণ করা। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়ম ও বিধির কার্যকর প্রয়োগের জন্য একটি আলাদা বিভাগ স্থাপন করতে হবে। বাকি ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ বিনিয়োগ ঋণ ও গ্যারান্টি সুবিধা হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
অন্যদিকে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB) বাংলাদেশকে ১.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। গতকাল ADB-এর একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তারা তিন ধাপে এই ঋণ ছাড় করতে প্রস্তুত। তবে ঋণ পেতে হলে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে হবে এবং ছোট ও মাঝারি শিল্পে (SME) ঋণ দেওয়ার জন্য নতুন প্রকল্প তৈরি করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাংক ও এডিবি থেকে ঋণ পেতে কিছু শর্ত পালন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে বেসরকারি খাতে ঋণ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠন এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসারে খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা নতুনভাবে নির্ধারণ করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শর্তগুলোর অন্তত ৫০% বাস্তবায়নের উদ্যোগ ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। বৈঠকে সামষ্টিক অর্থনীতির উন্নয়ন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক খাতের সংস্কারে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার ব্যাংক খাতের সংস্কারে জোর দিয়েছে, বিশেষত নতুন গভর্নর নিয়োগের পর থেকে। ইতিমধ্যে ১১টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
What's Your Reaction?