মানসিকতায় পরিবর্তন ঘটেছে
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে একটি জয়, ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ এবং টি-২০ সিরিজে প্রতিশোধ—এই তিন ফরম্যাটের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল তাদের সফর শেষ করেছে l
**সালাহউদ্দিন: 'আমার প্রমাণ করার কিছু নেই, ছেলেদের উন্নতিই বড় বিষয়'**
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে একটি জয়, ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ এবং টি-২০ সিরিজে প্রতিশোধ—এই তিন ফরম্যাটের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল তাদের সফর শেষ করেছে। বিশেষ করে, টি-২০ সিরিজে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় না থাকার পরেও জয় এনে দিয়েছে। এই সাফল্যের জন্য সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে বিশেষ কৃতিত্ব দেয়া হচ্ছে। সালাহউদ্দিন মনে করেন, ক্রিকেটারদের মানসিকতায় বড় পরিবর্তন এসেছে এবং তাদের স্বাধীনভাবে খেলতে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ ভালো ফল পেয়েছে।
**প্রশ্ন:** প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই সফল। দেশি কোচ হিসেবে প্রমাণ করার আর কিছু কি আছে?
**সালাহউদ্দিন:** আমার প্রমাণ করার কিছু নেই। আমার কাজ হলো ছেলেদের উন্নতি হচ্ছে কিনা সেটা দেখতে এবং তাদের সঠিক পথে চলা নিশ্চিত করা। আমি ভাবি না কে কী বলছে। আমার কাছে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ছেলেদের উন্নতি এবং তারা মাঠে ঠিকমতো খেলছে কিনা।
**প্রশ্ন:** টি-২০ দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় আপনার হাত ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে এসেছেন। আপনাকে পেয়েই কি কাজটা সহজ হয়েছে?
**সালাহউদ্দিন:** মেহেদী হাসান, জাকের আলী, লিটন দাস—এরা হয়তো বিপিএল বা ঢাকা লিগে আমার অধীনে খেলেছে, তাই আমার কাজ কিছুটা সহজ হয়েছে। তাদের খেলার ধরন আমি ভালো জানি, কিন্তু মাঠের কাজ তারা নিজেই করবে। আমাদের ছেলেরা স্কিলফুল। ড্রেসিংরুমের পরিবেশও ছিল দারুণ। এই সাফল্য পুরো দলের।
**প্রশ্ন:** টি-২০ ফরম্যাটে সবকিছু রাতারাতি বদলে গেছে। আপনি কি মনে করেন, এই সাফল্যের পেছনে আপনার অবদান কী?
**সালাহউদ্দিন:** এখানে আমি কিছু করিনি। প্রধান কোচের অবদান অনেক বড়। তিনি খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং আমাদের কোচিং স্টাফকেও একই স্বাধীনতা দিয়েছেন। আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মানসিকতায় একটা বড় পরিবর্তন এসেছে।
**প্রশ্ন:** ক্রিকেটারদের মানসিকতায় পরিবর্তনের জন্য কি কোনো বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল?
**সালাহউদ্দিন:** তারা এখন নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে শিখেছে এবং নিজেদেরকে আরো বড় ভাবতে শুরু করেছে। যে তারা পারে। এই মানসিক উন্নতি ভবিষ্যতে তাদের কাজে আসবে।
**প্রশ্ন:** সিরিজ শুরুর আগে কী ভাবনা ছিল, অনেকেই ছিলেন না।
**সালাহউদ্দিন:** সিরিজ শুরুর আগে আমি বলেছিলাম, আমরা কীভাবে ভালো ফল নিয়ে আসতে পারি। টেস্টে আমরা ভালো করেছি, দ্বিতীয় ওয়ানডে ছাড়া সবগুলো ম্যাচে ভালো খেলেছি। ওয়ানডেতে হয়তো ফলটা আসেনি, তবে ইনজুরির কারণে প্রথম সারির তিনজন খেলতে পারেননি। তবে ছেলেরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখতে শিখেছে।
**প্রশ্ন:** সবাই বলছে আপনি কোচ হওয়ায় জাকের আলী, শেখ মেহেদীরা সাহস নিয়ে খেলতে পারছেন...
**সালাহউদ্দিন:** জাকের ব্যাটার হিসেবে যথেষ্ট পরিণত। সে জানে কখন কী করতে হবে, এরকম পরিস্থিতিতে যে কোনো ক্রিকেটারের জন্য এটা দরকার। বাকি যারা আছে, তারা আমার সাথে অনেক দিন খেলেছে, একটা কমফোর্ট জোন তৈরি হয়েছে। তাই কাজটা সহজ হয়েছে।
**প্রশ্ন:** আপনার পিতৃতুল্য আচরণে ছেলেরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন?
**সালাহউদ্দিন:** হ্যাঁ, স্বাভাবিকভাবে। ছেলেরা খারাপ খেললে আমি তাদের পাশে থাকি। ভালো খেললে সবাই থাকে। কোচ হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব।
**প্রশ্ন:** পুরো সিরিজে জাকের দারুণ ব্যাটিং করেছেন। আপনি তাকে বহুদিন ধরে চেনেন। অন্যদের থেকে তিনি কোথায় আলাদা?
**সালাহউদ্দিন:** জাকের খুব স্কিলফুল ক্রিকেটার। ঢাকা লিগ কিংবা বিপিএলে, সে বিভিন্ন পজিশনে খেলেছে এবং জানে কোন ভূমিকায় তাকে কীভাবে খেলতে হবে। তার এই পরিপক্বতা আমাদের অন্য ব্যাটারদের মধ্যে আসবে, তবে এই পরিপক্বতা সবার মধ্যে আসলে দল আরো শক্তিশালী হবে।
**প্রশ্ন:** ভবিষ্যতে প্রধান কোচ হতে রাজি আছেন?
**সালাহউদ্দিন:** এখন এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না। আমি যে রোলে আছি, সেটাই উপভোগ করছি। ছেলেদের সাহায্য করতে পারলে সেটাই আমার জন্য সার্থকতা। তাদের সামান্য উন্নতিই আমাকে সন্তুষ্ট করবে।
What's Your Reaction?