দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁর বদলগাছীতে , শিশির ঝরছে বৃষ্টির মতো

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনপদ নওগাঁয় গতকাল মঙ্গলবারের তুলনায় আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত তাপমাত্রা কমেছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই দুই দিনে সূর্যের দেখা পাননি স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশা দেখা গেছে। এ সময়ে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছিল শিশির। সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে গাড়ি। দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে মানুষ। অনেকেই হিমেল বাতাসের দাপটে কাজে যেতে পারেননি।

Dec 11, 2024 - 06:35
 0  1
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁর বদলগাছীতে ,  শিশির ঝরছে বৃষ্টির মতো
ঘন কুয়াশার কারণে নওগাঁয় দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। আজ সকাল ৯টায় শহরের লিটন ব্রিজ এলাকায়

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনপদ নওগাঁয় গতকাল মঙ্গলবারের তুলনায় আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত তাপমাত্রা কমেছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই দুই দিনে সূর্যের দেখা পাননি স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশা দেখা গেছে। এ সময়ে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছিল শিশির। সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে গাড়ি। দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে মানুষ। অনেকেই হিমেল বাতাসের দাপটে কাজে যেতে পারেননি।

আজ সকাল ৯টার দিকে নওগাঁ পৌরসভার উকিলপাড়া, তাজের মোড় ও পার-নওগাঁয় এলাকায় দেখা যায়, চারদিক ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে। রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের সংখ্যা খুবই কম। কয়েকটি গাড়ি হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছিল।

আজ সকালে নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলার তাপমাত্রা কমেছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৯টায় বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আগের দিন মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত শনিবার নওগাঁর বদলগাছীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গতকালের চেয়ে আজ শীতের তীব্রতা বেড়েছে বলে জানান বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, জেলায় ঘন কুয়াশার সঙ্গে হালকা বাতাস বইছে। এ কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। গতকাল বেলা ৩টায় বদলগাছীতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বেলা ৩টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টায় গড় তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসের কারণে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসছে। সূর্যের দেখা না মেলায় রাতের পাশাপাশি দিনেও শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে।

হঠাৎ ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা বাড়ায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা বিপাকে পড়েছেন। রোদ না ওঠায় শহরে মানুষের আনাগোনাও কমেছে। যাঁরা বের হয়েছেন, তাঁরা মোটা ও গরম কাপড় জড়িয়ে বাইরে এসেছেন।

শহরের তাজের মোড় লিটন ব্রিজের পূর্ব পাশে যমুনা হোটেলের সামনে প্রতিদিন বসে শ্রম কেনাবেচার হাট। সেখানে দিনমজুরেরা কাজের আশায় অপেক্ষা করেন। আজ সকাল ৯টার দিকে সেখানে কয়েকজন দিনমজুরের সঙ্গে কথা হয়। তছিমুদ্দিন নামের এক দিনমজুর বলেন, ‘সারা দিন সূর্যের দেখা নাই। মালিকেরা কাজকাম করোছে না। সপ্তাহের প্রতিদিন কামই পাওয়া যায় না। যতই ঠান্ডা হোক, প্যাটের তাগিদে হামাগের কাম করাই লাগবে। কিন্তু কামই তো পাছি না।’

ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার তীব্রতার কারণে সড়কে ঠিকমতো ভ্যান চালাতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘সোমবার থ্যাকে তো সূর্যের দেখাই নাই। কুয়াশাত রাস্তা ঠিকমতো দেখা যাওছে না। বড় গাড়ি সামনত থ্যাকে লাইট দিলে তো আরও কিছু দেখা যাওছে না। জান হাতত লিয়ে রাস্তাত ভাড়া মারোছি।’

শহরের উকিলপাড়া এলাকায় টিফিন রেস্টুরেন্টের মালিক জিয়াউল হক শুভ বলেন, শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বেরই হচ্ছে না। হোটেলে খাওয়ার লোকজন নেই। দিনে ১০ হাজার টাকারও বেচাবিক্রি নেই।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow