ভাড়া এবং খাবারের দাম অতিরিক্ত নেওয়ার অভিযোগ

শীতের ছুটিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর পরিবার-পরিজন নিয়ে লাখো মানুষ সমুদ্রসৈকতের দিকে ছুটেছেন। কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের সব কক্ষ ইতিমধ্যেই বুকিং হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই পর্যটক ঢল মার্চ মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

Dec 18, 2024 - 04:40
 0  3
ভাড়া এবং খাবারের দাম অতিরিক্ত নেওয়ার অভিযোগ

শীতের ছুটিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর পরিবার-পরিজন নিয়ে লাখো মানুষ সমুদ্রসৈকতের দিকে ছুটেছেন। কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের সব কক্ষ ইতিমধ্যেই বুকিং হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই পর্যটক ঢল মার্চ মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

মঙ্গলবার সৈকতের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জনস্রোত দেখা গেছে, বিশেষ করে সুগন্ধা, কলাতলি ও লাবণী পয়েন্টে লাখো মানুষের উপস্থিতি কক্সবাজারে কয়েক লাখ পর্যটকের আগমনের ইঙ্গিত দিয়েছে। ইনানী ও অন্যান্য পয়েন্টেও কুয়াশার মধ্যে অসংখ্য মানুষ বেলাভূমিতে হাঁটছেন। শীত উপেক্ষা করে অনেকেই নোনা জলে গোসল করছেন। কেউ জেট স্কি চালিয়ে ঢেউ মাড়াচ্ছেন, আবার কেউ ঘোড়ার পিঠে বেলাভূমি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিচ বাইকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরছেন অনেকে। ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা নিরাপত্তার জন্য তৎপর, আর লাইফগার্ড কর্মীরা গোসলরতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন।

কক্সবাজার হোটেল-গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, তারকা মানের হোটেলসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৫ শতাধিক হোটেলে এক লাখ ৩০ হাজার পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে গড়ে লাখখানেক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। 

টুয়াক (ট্যুর অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার) সভাপতি মো. রেজাউল করিম জানান, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ, দরিয়ানগর পর্যটন স্পট, হিমছড়ির ঝরনা, ইনানী-পাটুয়ারটেক পাথুরে সৈকত, টেকনাফ সমুদ্রসৈকত, মাথিন কূপ, নেচার পার্ক, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, রামুর বৌদ্ধবিহারসহ অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা উপভোগ করছেন।

পর্যটন উদ্যোক্তা আব্দুর রহমান জানান, মিয়ানমারের রাখাইনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাট থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন। 

ওশান প্যারাডাইস হোটেলের ম্যানেজার আবদুল হান্নান বলেন, গত কয়েক দিন ধরে রুমের চাহিদা বেড়েছে এবং অনেক পর্যটক আগাম বুকিং দিয়ে এসেছেন, তাই এখন রুমের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। 

কক্স-টু ডে হোটেলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবু তালেব শাহ বলেন, হোটেল কক্ষের চাহিদা এতটাই বেশি যে, আগামী সপ্তাহ-দশ দিনেও এই পরিস্থিতি থাকবে। একই অবস্থা লাবণী পয়েন্টের মিশুক, মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল কল্লোল, অভিসার, সি গাল, সুগন্ধা পয়েন্টের লেগুনা বিচ, সি-নাইট, অস্টার ইকো, ইউনি রিসোর্ট, ডায়মন্ড প্যালেস, ইকরা বিচ রিসোর্ট, কলাতলীর সায়মন বিচ রিসোর্টসহ অন্যান্য হোটেল ও রিসোর্টে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম জানান, লাখো পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৮৫ জন সদস্য কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। 

জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শহরের কলাতলী ডলফিন মোড়, বাইপাস সড়ক এবং প্রধান সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে অর্ধশতাধিক পুলিশ কাজ করছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কক্ষ ভাড়া কিংবা খাবারের দাম নেওয়ার অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বিষয় তদারকি করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow