হাসিনা সহ ভারতে বসে যারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা সফল হবে না: হাসনাত
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ভারতে বসে যারা ষড়যন্ত্র করছে তারা কখনোই সফল হতে পারবে না। শেখ হাসিনা এবং তার দোসরদের স্বপ্ন কখনোই বাংলাদেশের জনগণ পূর্ণ হতে দিতে দেবে না।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ভারতে বসে যারা ষড়যন্ত্র করছে তারা কখনোই সফল হতে পারবে না। শেখ হাসিনা এবং তার দোসরদের স্বপ্ন কখনোই বাংলাদেশের জনগণ পূর্ণ হতে দিতে দেবে না।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কাউন্সিলর সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্রকারীরা ছাত্র-জনতার তীব্র গণআন্দোলনের মুখে পালিয়ে গেছে। অথচ তারা আমাদের বলছে আমরা পালানোর পথ পাব না—এটা হাস্যকর।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ তাদের ষড়যন্ত্রের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে, আর শেখ হাসিনার সরকারের স্বপ্ন পূর্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
এ দিন কাউন্সিলরদের সমাবেশে ছাত্র গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সিটি কর্পোরেশন ও পৌর কাউন্সিলরদের জনস্বার্থে পুনর্বহাল করার দাবি জানানো হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সদ্য সাবেক সভাপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিদ আলম, বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম মধু, সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী গোলাম কিবরিয়া, পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান জাহিদ প্রমুখ।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, "আওয়ামী লীগের দোসর জনপ্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই শেখ হাসিনার সঙ্গে পালিয়ে গেছেন বা পালানোর পথ খুঁজছেন। তারা যা বলুক, আমরা জানি জনগণের আন্দোলন একসময় তাদের বিচারের সম্মুখীন করবে।"
এসময় ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বহাল রেখে সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের বাতিল করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বার এবং আমলারা এখনও বহাল তবিয়তেই রয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “যে আমলারা আওয়ামী লীগের দালালি করেছেন, তাদের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় দায়িত্ব দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সেই সঙ্গে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন, তাদের জনপ্রতিনিধিদের অবশ্যই বহাল রাখতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের মাধ্যমে সামনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যেখানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা জনগণের হাজার হাজার ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দেড় দশক ধরে আন্দোলন করে জেল জুলুমের শিকার হয়েছি। জনগণের পাশে থেকে সারাজীবন রাজনীতি করেছি। জুলাই আগস্টে ফ্যাসিস্ট সরকারের রক্ষুচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে থেকেছি। রাজপথে থেকেই ছাত্র-জনতার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখেছি। যারা ফ্যাসিবাদের সমর্থক যারা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী তাদের পদচ্যুত করার পক্ষে আমরা। কিন্তু আমরা যারা ফ্যাসিবাদ ও গণহত্যার বিপক্ষে রাজপথে সোচ্চার ছিলাম তাদেরকে অনতিবিলম্বে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় পুনর্বহাল করা হোক। সারাদেশে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো ফ্যাসিবাদের সমর্থক আমলাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছে সিটি কর্পোরশন ও পৌরসভা নিরাপদ নয়। জনভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি অনুধাবন করে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করব এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।
বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম মধু বলেন, আমরা চাইলে ঢাকায় ৫০ লাখ মানুষ সমবেত করতে পারি। কিন্তু আমরা এসব করতে চাই না। আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই।
তিনি বলেন, আমাকে রাজপথ থেকে গ্রেফতার করে ভাতের হোটেলের হারুন গুম করে রেখেছিল। আমার এক হাত ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু আমরা দমে যাইনি।
What's Your Reaction?