গাজায় ৯০ শতাংশ যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার দাবি

গত ১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত বর্বর হামলা চলছে, যার মধ্যে দিয়ে পুরো অঞ্চলের পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও ইসরাইল সেগুলোর প্রতি তেমন গুরুত্ব দেয়নি।

Dec 22, 2024 - 05:43
 0  0
গাজায় ৯০ শতাংশ যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার দাবি

**গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত, দাবি ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা**

গত ১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত বর্বর হামলা চলছে, যার মধ্যে দিয়ে পুরো অঞ্চলের পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও ইসরাইল সেগুলোর প্রতি তেমন গুরুত্ব দেয়নি। তবে এবার ফিলিস্তিনের এক শীর্ষ কর্মকর্তার দাবি, গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা প্রায় শেষের পথে। তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইতিমধ্যে ৯০ শতাংশ আলোচনা শেষ হয়েছে এবং আলোচনার ফলস্বরূপ যুদ্ধবিরতি চুক্তি দ্রুতই চূড়ান্ত হতে পারে।

বিবিসি বাংলার খবর অনুযায়ী, গাজার যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি নিয়ে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে যাচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত ৯০ শতাংশ আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। তবে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে, যেমন ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরাইলি সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত রাখা।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার দাবি, মিশর সীমান্তের ওই কৌশলগত করিডোরটি দক্ষিণ গাজার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, গাজার সঙ্গে ইসরাইল সীমান্তের কিছু এলাকায় সম্ভাব্য একটি বাফার জোন তৈরির প্রস্তাবও আলোচনায় রয়েছে। এই বাফার জোনের মধ্যে ইসরাইলের সামরিক উপস্থিতি বজায় থাকবে বলেও তিনি জানান।

এই কর্মকর্তা আরো জানান, যদি সব পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছায়, তাহলে কয়েক দিনের মধ্যে তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হতে পারে। প্রথম ধাপে, প্রত্যেক নারী সেনার মুক্তির বিপরীতে ২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। 

বিবিসি জানায়, ফিলিস্তিনি বন্দিদের নাম নিয়ে এখনো কোনো ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তবে, ইসরাইলে ২৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কারাবন্দী প্রায় ৪০০ জন ফিলিস্তিনি বন্দির মধ্যে থেকে তাদের বাছাই করা হবে। এর মধ্যে ফাতাহ দলের নেতা মারওয়ান বারঘৌতিও রয়েছেন, তবে তার মুক্তির বিষয়ে ইসরাইল ভেটো দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া, গাজার ৯৬ জিম্মির মধ্যে ৬২ জন এখনো জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করছে ইসরাইল। এই জিম্মিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে, কারণ কিছু নিখোঁজ জিম্মির অবস্থান জানার জন্য হামাসের অনুসন্ধানের প্রয়োজন হতে পারে।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা আরও জানান, আলোচনা অনুযায়ী, মিশরীয় এবং কাতারি তত্ত্বাবধানে গাজার বেসামরিক নাগরিকরা উত্তর দিকে ফিরতে পারবেন, এবং প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ট্রাক ত্রাণ নিয়ে গাজায় প্রবেশ করবে। 

যুদ্ধবিরতির তিন ধাপের চূড়ান্ত পর্যায়ে, ১৪ মাসের এই যুদ্ধের অবসান দেখা দিতে পারে এবং এরপর গাজাকে তত্ত্বাবধান করতে একটি টেকনোক্র্যাট কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটিতে তারা থাকতে পারবেন, যাদের অতীতে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার ইতিহাস নেই এবং যাদের প্রতি ফিলিস্তিনের সব পক্ষের সমর্থন থাকবে।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশর যুদ্ধবিরতির আলোচনা পুনরায় শুরু করেছে এবং একটি চুক্তি সম্পাদনে উভয় পক্ষও বৃহত্তর সদিচ্ছা প্রকাশ করেছে। এর আগে, অক্টোবর মাসে এক দফা আলোচনা চললেও তা কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছিল। তখন হামাস স্বল্পমেয়াদী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।

হামাস এবং ফিলিস্তিনের অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী জানিয়েছে, ইসরাইল যদি নতুন শর্ত আরোপ করা বন্ধ করে, তাহলে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো আরও সহজ হবে। হামাস তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছে, চলমান আলোচনা অংশ হিসেবে শুক্রবার কায়রোতে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলায় ১২০০ ইসরাইলি নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়। এর পর থেকেই গাজায় ইসরাইলের হামলা অব্যাহত রয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow