জুলাই-আগস্টের ধাক্কা কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি। তিন মাস ধরে পণ্য রপ্তানিতে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। গত দুই মাসে টানা ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস (জুলাই-নভেম্বর) দেশ থেকে মোট ২ হাজার কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১.৩৫% বেশি।
রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন, রাজনৈতিক পরিবর্তন, শ্রম অসন্তোষ এবং বন্যার কারণে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে অনেক ক্রয়াদেশের পণ্য সময়মতো রপ্তানি করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন সেই আটকে থাকা পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ক্রয়াদেশ বেড়েছে। এই দুটি বাজার ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, যার ফলে রপ্তানি বেড়েছে।
এছাড়া, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৪% বেশি। ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের বাজার ভালো হওয়ায় আগামী বসন্ত ও গ্রীষ্মে ক্রয়াদেশের পরিমাণ বাড়বে।
বাংলাদেশ দুই বছর ধরে ডলার সংকটে ভুগছে, তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে রিজার্ভের পতন থেমে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার, যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভ ১ হাজার ৮৭৪ কোটি ডলার।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে ৩৮২ কোটি, আগস্টে ৪০৭ কোটি ও সেপ্টেম্বরে ৩৮৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। অক্টোবরে ৪১৩ কোটি ও নভেম্বরে ৪১২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪.৭৬% বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইলে এবং হিমায়িত খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে।
