ভারতে পেঁয়াজের দাম পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ
ভারতে খাদ্য পণ্যের দাম বেড়ে গিয়ে মূল্যস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ, আলু, টমেটোর দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং পেঁয়াজের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে সোনার এবং রুপার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতে বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি, সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিও বৃদ্ধি পেয়েছে
ভারতে খাদ্য পণ্যের দাম বেড়ে গিয়ে মূল্যস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ, আলু, টমেটোর দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং পেঁয়াজের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে সোনার এবং রুপার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই পণ্যগুলোর দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতির সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব। সরকার পেঁয়াজের দাম নভেম্বরের শেষের দিকে কমানোর আশ্বাস দিয়েছে।
ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মাত্র চার দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ২১ শতাংশ বেড়েছে, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। বর্তমানে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম গড়ে ৬০ রুপি কেজি। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, অক্টোবর মাস থেকেই পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে এবং নভেম্বরে তা অনেকটা বৃদ্ধি পায়।
ভারতের মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁওয়ে সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের বাজার রয়েছে, যেখানে ৪ নভেম্বর পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ৪৭.৭০ রুপি, যা ৭ নভেম্বর বেড়ে ৫৭.৭০ রুপি হয়ে যায়। একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে আলু ও টমেটোর দামেও।
অক্টোবর মাসে ভারতের খুচরা মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.২১ শতাংশ, যার মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮৭ শতাংশ। গত এক বছরে গড় খুচরা মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশ, এবং খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৮ শতাংশ।
ভারতের হর্টিকালচার প্রোডিউসার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি বিকাশ সিংহ বলেছেন, শীতকালীন সবজি বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা কম, তবে ডিসেম্বরের শুরুতে দাম কমতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে পাইকারি মূল্যস্ফীতি ছিল ২.৩৬ শতাংশ, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই বৃদ্ধির মূল কারণ জরুরি খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি।
অক্টোবর মাসে খাদ্যপণ্যের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ছিল ১৩.৫৪ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বর মাসে ছিল ১১.৫৩ শতাংশ। সবজির পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৬৩.০৪ শতাংশ, যার মধ্যে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ৩৯.২৫ শতাংশ এবং আলুর মূল্যবৃদ্ধি ৭৯ শতাংশ।
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খারিফ ও রবিশস্যের ফসলের বাজারের দিকে নজর রাখতে হবে। খারিফ মৌসুমের ফসল চলতি মাসে বাজারে আসতে পারে এবং রবি ফসল এপ্রিল থেকে আসবে। তবে খাদ্যপণ্যের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব খুচরা বাজারে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ আরও বেশি দুর্ভোগে পড়বে।
ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব তুহিন কান্ত পাণ্ডে বলেন, “পেঁয়াজসহ পাঁচটি পণ্য বাদে মূল্যস্ফীতি ৪.২ শতাংশে নেমে আসবে; তবে পেঁয়াজ, আলু, টমেটো, সোনা ও রুপার দাম বাড়ানোর কারণে একটি ব্যতিক্রমী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে খারিফ শস্যের ক্ষতি হওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
অক্টোবর মাসে সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৮০ হাজার রুপি ছাড়িয়ে গিয়েছিল, বর্তমানে দাম কমে ৭৫ হাজার রুপির কাছাকাছি। একইভাবে রুপার দামও কমেছে।
এদিকে, ভারতের শহরাঞ্চলে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চাহিদা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে বলে সিটি ব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে। উৎসবের মৌসুমেও চাহিদা বাড়েনি, ফলে প্রবৃদ্ধির ওপর এই পরিস্থিতির প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
What's Your Reaction?