যেসব কারণে দিল্লি ও ঢাকার সম্পর্ক কিছুতেই সহজ হচ্ছে না
মাত্র তিন মাস আগেও বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ককে দুই দেশের শীর্ষ নেতারা "সোনালি অধ্যায়" বলে বর্ণনা করতেন। কিন্তু বর্তমানে এই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এক অস্বস্তিকর শীতলতায় পরিণত হয়েছে।
ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের টানাপোড়েন: কূটনৈতিক অস্বস্তি ও ভবিষ্যতের ভাবনা
মাত্র তিন মাস আগেও বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ককে দুই দেশের শীর্ষ নেতারা "সোনালি অধ্যায়" বলে বর্ণনা করতেন। কিন্তু বর্তমানে এই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এক অস্বস্তিকর শীতলতায় পরিণত হয়েছে।
প্রধান কারণসমূহ:
১. ভারত-বাংলাদেশ নেতাদের বৈঠকের অভাব:
মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার সরাসরি কোনো বৈঠক হয়নি। সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের অধিবেশনের সময় বাংলাদেশ বৈঠকের প্রস্তাব করলেও তা উপেক্ষিত হয়।
২. হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ:
ভারত বারবার অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী মোদি বিষয়টি সরাসরি তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য, এসব হামলার সংখ্যা ও প্রকৃতি বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে।
৩. শেখ হাসিনার ভারত-নির্বাসন:
ভারত সরকারের আশ্রয়ে আছেন শেখ হাসিনা, যা কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও তিক্ত করে তুলেছে। শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানালেও ভারত সাড়া দেয়নি।
৪. বাণিজ্য ও পরিবহন বাধা:
গত কয়েক মাস ধরে ভারত-বাংলাদেশ ভিসা কার্যক্রম এবং গুরুত্বপূর্ণ রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন প্রকল্পও বাংলাদেশে স্থগিত রয়েছে।
৫. কূটনৈতিক প্রত্যাশার অমিল:
ভারত মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচনের জন্যই দায়িত্বপ্রাপ্ত। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ভারতের কাছে বৈধতা ও ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ:
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে "মানুষে-মানুষে সংযোগ" ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
ভারতের সাবেক কূটনীতিবিদ টিসিএ রাঘবন বলেছেন, "বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারত নিরপেক্ষ থাকার বার্তা দিতে পারলে পরিস্থিতি উন্নত হতে পারে। তবে শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের অবস্থান এখন কৌশলগত বাধ্যবাধকতা।"
বিশ্লেষণ:
দুই দেশের এই টানাপোড়েন শুধু কূটনৈতিক সম্পর্কেই নয়, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
What's Your Reaction?