সত্যিই কি কোথাও কোনো ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হওয়ায় তাদের সাফল্য-ব্যর্থতা, সক্ষমতা এবং দুর্বলতা নিয়ে জোর আলোচনা-সমালোচনা চলছে। জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বমূল্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, প্রশাসনের স্থবিরতা, অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ এবং উপদেষ্টাদের যোগ্যতা-দক্ষতা—এসবই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আলোচনা, সমালোচনা ও রাজনীতির ভবিষ্যৎ
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হওয়ায় তাদের সাফল্য-ব্যর্থতা, সক্ষমতা এবং দুর্বলতা নিয়ে জোর আলোচনা-সমালোচনা চলছে। জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বমূল্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, প্রশাসনের স্থবিরতা, অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ এবং উপদেষ্টাদের যোগ্যতা-দক্ষতা—এসবই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
এই সরকার রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ হলেও এর পেছনের শক্তি মূলত রাজনৈতিক। সফল গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত এই সরকারের ভিত্তি সেই গণজাগরণ, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সহযোগিতা ও সমর্থন পেয়েছিল।
রাজনীতির মাঠের পরিস্থিতি
সরকারের ১০০ দিন নিয়ে আলোচনা থাকলেও রাজনীতির মাঠে অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর যে নতুন রাজনীতির আশা তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসছে। মাঠে অনৈক্য, সন্দেহ ও বিভ্রান্তি বাড়ছে।
গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী শক্তি। তারা কী চায় বা কতটা অগ্রসর হতে চায়, তা স্পষ্ট নয়। এদিকে, ক্ষমতায় ফেরার প্রত্যাশায় বিএনপিসহ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামপন্থী এবং ডান-বাম অন্যান্য দলগুলোও সক্রিয়। অন্যদিকে, পতিত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ মাঠে নেই, তবে তাদের গোপন তৎপরতার শঙ্কা রয়েছে।
পানি ঘোলা করার আশঙ্কা
রাজনীতির মাঠে বিভ্রান্তির সুযোগ নিতে পারে বিভিন্ন গোপন ও অচেনা শক্তি। আওয়ামী লীগ তাদের আর্থিক ক্ষমতা এবং লুটপাট করা সম্পদ কাজে লাগিয়ে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা করতে পারে।
ছাত্রদের ভূমিকা ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা সরকারের অংশ হলেও তাদের ভেতরে মতভেদ ও সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছে। উপদেষ্টাদের নিয়োগ নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়েছে। নতুন উপদেষ্টাদের নিয়ে তাদের আপত্তি এবং সরকারের নানা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা জনমনে প্রশ্ন তুলছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য ও বিতর্ক
ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশ সংস্কারের কাজ শেষ করে নির্বাচনের দিকে যেতে চায়। তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বক্তব্য অনুযায়ী, এই সরকার শুধু নির্বাচন আয়োজনের জন্য নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের জন্য কাজ করছে। তবে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা
রাজনীতিতে আলো কমে যাওয়ায় এবং মাঠ ঘোলা হয়ে যাওয়ায় গণ-অভ্যুত্থানের অর্জন হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিক সমাজের একটি অংশ হতাশ হয়ে অভ্যুত্থানের ব্যর্থতার কথা বলছেন। অন্যদিকে, কেউ কেউ নতুন ফর্মুলা দিয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।
এই পরিস্থিতিতে, গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ না করে, তবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং বিভ্রান্তি আরও বাড়তে পারে। সুশাসন এবং গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠা করার জন্য সবাইকে সুসংগঠিত এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
What's Your Reaction?