বড় দুঃসংবাদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, দায় নিতে হবে পরবর্তী সরকারকেও
বিশ্বব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত “আন্তর্জাতিক ঋণ প্রতিবেদন ২০২৪”-এ বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক তথ্য উঠে এসেছে। নতুন ঋণ ছাড় কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতি চাপে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে নতুন ঋণের বড় অংশই আগের ঋণ ও সুদ পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে। একইসঙ্গে ঋণের সুদের হার বেড়েছে, কমেছে ঋণ পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ড।
বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের ওপর বিশ্বব্যাংকের সতর্কবার্তা
বিশ্বব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত “আন্তর্জাতিক ঋণ প্রতিবেদন ২০২৪”-এ বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক তথ্য উঠে এসেছে। নতুন ঋণ ছাড় কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতি চাপে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে নতুন ঋণের বড় অংশই আগের ঋণ ও সুদ পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে। একইসঙ্গে ঋণের সুদের হার বেড়েছে, কমেছে ঋণ পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ড।
ঋণের চাপ বাড়ছে
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিকভাবে সুদের হার বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের পরিমাণ ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় ৯০ শতাংশ বেড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতে এই বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি।
২০২৩ সালের শেষে দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০,১৪৫ কোটি ডলারে, যা ২০১০ সালে ছিল মাত্র ২,৬৫৭ কোটি ডলার।
নতুন ঋণের পরিস্থিতি
২০২২ সালে নতুন ঋণ ছাড় করা হয়েছিল ১,৩৩৮ কোটি ডলার। ২০২৩ সালে তা কমে ১,২৮৪ কোটি ডলারে নেমেছে। নতুন ঋণের ক্ষেত্রে গ্রেস পিরিয়ড কমে আসছে, এবং সুদের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ শতাংশে।
ঋণের উৎস
বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের ২৬ শতাংশ এসেছে বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইডিএ- থেকে, যা কম সুদের এবং দীর্ঘ মেয়াদের। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে নেওয়া হয়েছে ২০ শতাংশ, জাপান থেকে ১৫ শতাংশ, এবং চীন থেকে ৯ শতাংশ।
ঝুঁকি ও সুযোগ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিডিপির বিপরীতে বৈদেশিক ঋণের হার ২২ শতাংশ, যা এখনো সহনীয় মাত্রায়। তবে ঋণগ্রহীতাদের জন্য সুদের হার এবং পরিশোধের শর্ত কঠিন হয়ে ওঠায় ভবিষ্যতে চাপ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অতীত সরকারের ভূমিকা
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৯-২০২৩ সময়কালে সরকার বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। এই ঋণের অর্থের সঠিক ব্যবহার নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, এসব ঋণের মাধ্যমে লুটপাট ও অর্থপাচার হয়েছে।
বৈশ্বিক চিত্র
বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ, যেমন ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাও বৈদেশিক ঋণের চাপের মুখে রয়েছে। তবে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতি এখনো ঝুঁকির সীমা অতিক্রম করেনি।
বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদন দেশের নীতি নির্ধারকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। ঋণের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি এতে গুরুত্ব পেয়েছে।
What's Your Reaction?