বৈশ্বিক দাবার বোর্ড সিরিয়া, ৫ কারণে যুদ্ধ বন্ধ করা কঠিন

সিরিয়া এখন একটি বৈশ্বিক রাজনৈতিক দাবার বোর্ডে পরিণত হয়েছে, যেখানে তুরস্ক, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং ইরান-রাশিয়ার মতো শক্তিধর দেশগুলো তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সিরিয়ান সরকারের বিরুদ্ধে বড় আক্রমণ চালিয়ে আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, যা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এ ঘটনায় দেশটিতে সংঘাত আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে।

Dec 8, 2024 - 04:03
 0  3
বৈশ্বিক দাবার বোর্ড সিরিয়া, ৫ কারণে যুদ্ধ বন্ধ করা কঠিন

সিরিয়া এখন একটি বৈশ্বিক রাজনৈতিক দাবার বোর্ডে পরিণত হয়েছে, যেখানে তুরস্ক, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং ইরান-রাশিয়ার মতো শক্তিধর দেশগুলো তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সিরিয়ান সরকারের বিরুদ্ধে বড় আক্রমণ চালিয়ে আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, যা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এ ঘটনায় দেশটিতে সংঘাত আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে।

সিরিয়ার বিভক্তি

২০১৮ সাল থেকে সিরিয়া তিনটি প্রধান শাসন ব্যবস্থায় বিভক্ত:

  1. বাশার আল-আসাদের শাসনাধীন অঞ্চল।
  2. কুর্দি বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকা।
  3. ইসলামি বিদ্রোহীদের দখলে থাকা অঞ্চল।

যুদ্ধ বন্ধে পাঁচটি প্রধান চ্যালেঞ্জ

বিবিসি জানিয়েছে, পাঁচটি মূল কারণ যুদ্ধ বন্ধকে কঠিন করে তুলেছে:

  1. বিদেশি স্বার্থ।
  2. অর্থনৈতিক ধস ও মানবিক সংকট।
  3. কর্তৃত্ববাদী শাসন।
  4. বিভক্ত সমাজ।
  5. ব্যর্থ আন্তর্জাতিক কূটনীতি।

বিদেশি স্বার্থ

তুরস্ক, সৌদি আরব এবং যুক্তরাষ্ট্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে ইরান ও রাশিয়ার শক্তিশালী সমর্থন বাশার আল-আসাদের শাসনকে এখনও টিকিয়ে রেখেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যকার সংঘাত এবং মার্কিন সমর্থিত কুর্দি গোষ্ঠীর স্বায়ত্তশাসনের দাবি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।

মানবিক সংকট

যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৬৮ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত এবং আরও ৬০ লাখ মানুষ অন্য দেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছে। মানবিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে প্রায় ১ কোটি ৫৩ লাখ মানুষ মানবিক সহায়তার প্রয়োজন ছিল।

কর্তৃত্ববাদী শাসন

আসাদ সরকার বরাবরই ক্ষমতায় থাকার জন্য দমনমূলক নীতি অনুসরণ করেছে। রাসায়নিক হামলা, মানবিক সাহায্যে বাধা এবং জনবহুল এলাকায় আক্রমণ শাসনের কিছু সাধারণ দৃষ্টান্ত।

বিভক্ত সমাজ

সিরিয়ার অভ্যন্তরে জাতিগত ও ধর্মীয় বিভেদ সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করছে। বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশ, যা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর শক্ত ঘাঁটি। তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যকার সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে।

ব্যর্থ কূটনীতি

জাতিসংঘের নেতৃত্বে শান্তি আলোচনা বারবার ব্যর্থ হয়েছে, কারণ মূল অংশীদারদের পরস্পরবিরোধী লক্ষ্য রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং স্বার্থের সংঘাত একটি স্থায়ী সমাধানের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।

বিশেষজ্ঞ মতামত
বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ার ভবিষ্যৎ এখনও অন্ধকারাচ্ছন্ন। দেশটির অর্থনৈতিক, মানবিক এবং রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং কৌশলগত সমঝোতা প্রয়োজন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow