পালাননি সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী, ক্ষমতা হস্তান্তরে সহযোগিতার ঘোষণা
বিদ্রোহীদের রাজধানী দামেস্ক দখলের ঘোষণার পর সিরিয়া ছাড়েন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, পরিস্থিতির বিশৃঙ্খলা এড়াতে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি দায়িত্ব পালন করবেন।
বিদ্রোহীদের রাজধানী দামেস্ক দখলের ঘোষণার পর সিরিয়া ছাড়েন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, পরিস্থিতির বিশৃঙ্খলা এড়াতে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি দায়িত্ব পালন করবেন।
রোববার আল-জালালি বলেছেন, তিনি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্ব এবং ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার জন্য সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি বিবৃতিতে জানান, “এই দেশটি একটি স্বাভাবিক দেশ হতে পারে যা তার প্রতিবেশী এবং বিশ্বে সুসম্পর্ক তৈরি করতে পারে... তবে এটি সিরিয়ার জনগণের নির্বাচিত নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করে। আমরা তাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত।”
এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সিরিয়ার শাসনভার প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকবে। তিনি বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দামেস্কের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
টেলিগ্রামে একটি বিবৃতিতে তিনি জানান, দামেস্ক শহরের সব সামরিক বাহিনীর জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যাওয়ার ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে। এছাড়া, গোষ্ঠীটি উন্মুক্ত আকাশে গুলি চালানোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
২০১১ সালে আরব বসন্তের প্রভাবে সিরিয়ায় বিক্ষোভ শুরু হয়, যা পরে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। রাশিয়া এবং ইরানের সমর্থনপুষ্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেন, তবে গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া নতুন লড়াইয়ে একের পর এক বড় শহরের নিয়ন্ত্রণ হারান সরকারি বাহিনী।
রোববার বিদ্রোহী গোষ্ঠী টেলিগ্রামে জানায়, “বাথ শাসনের অধীনে ৫০ বছরের নিপীড়ন এবং ১৩ বছরের অপরাধ ও অত্যাচারের পর আমরা আজ এই অন্ধকার সময়ের অবসান এবং সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করছি।”
দুই সিনিয়র সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বিদ্রোহীরা কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই রাজধানীতে প্রবেশ করেছে। হাজার হাজার গাড়ি এবং পায়ে হেঁটে মানুষ দামেস্কের প্রধান চত্বরে জড়ো হয়ে স্বাধীনতার স্লোগান দিয়েছে।
বিদ্রোহীরা আরও ঘোষণা করেছে, তারা দামেস্কের উত্তরে সাইদনায়া সামরিক কারাগারে প্রবেশ করে তাদের বন্দিদের মুক্ত করেছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর, সিরিয়ার সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনী দামেস্ক বিমানবন্দর ত্যাগ করে পালিয়ে গেছে।
What's Your Reaction?