আসাদ কি রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে? যা বললেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দামেস্ক থেকে পালিয়ে বর্তমানে মস্কোতে অবস্থান করছেন। রাশিয়া দীর্ঘদিন আসাদ সরকারের মিত্র থাকায় ধারণা করা হচ্ছে, আসাদ ও তার পরিবার সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবেন।
রুশ গণমাধ্যমের প্রতিবেদন
রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দামেস্ক থেকে পালিয়ে বর্তমানে মস্কোতে অবস্থান করছেন। রাশিয়া দীর্ঘদিন আসাদ সরকারের মিত্র থাকায় ধারণা করা হচ্ছে, আসাদ ও তার পরিবার সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, আসাদ সরকারের পতন তাদের নিজের নীতির ফল। তিনি মন্তব্য করেন, "দেশে গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া না থাকা এবং রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনের ওপর নির্ভরশীলতা তার পতনকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছে।"
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, "একটি বর্বর রাষ্ট্রের পতন হয়েছে।" জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেন, "সিরিয়ার জনগণের দীর্ঘ দুর্ভোগের পর আসাদ সরকারের পতন একটি ভালো খবর।"
উপসাগরীয় দেশ ও ইসলামপন্থীদের উদ্বেগ
উপসাগরীয় আরব দেশগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আসাদ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন করছিল। তবে ইসলামপন্থীদের নেতৃত্বে নতুন সিরিয়ার ভবিষ্যৎ তাদের কিছুটা শঙ্কিত করেছে। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরিয়ার ঐক্য সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
শরণার্থী ইস্যু
তুরস্কে থাকা প্রায় ৩০ লাখ সিরিয়ান শরণার্থী এখন নিজ দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। ইতোমধ্যে লেবানন ও জর্ডানে থাকা অনেক সিরিয়ান দেশে ফিরতে শুরু করেছেন।
জাতিসংঘের আলোচনা
সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আজ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আসাদের পতনকে "ঐতিহাসিক সুযোগ" হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, "রাশিয়া, ইরান বা হিজবুল্লাহ কেউ আসাদকে রক্ষা করতে পারেনি।"
বিদ্রোহী নেতা জোলানির নতুন পরিচয়
সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা আবু মোহাম্মেদ আল-জোলানি তার পুরনো জিহাদি পরিচয় থেকে সরে এসে এখন নিজের প্রকৃত নাম আহমেদ আল-শারা ব্যবহার শুরু করেছেন। তার নেতৃত্বাধীন ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হায়াত আল-শাম (এইচটিএস) দামেস্ক দখল করে সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।
দেশজুড়ে উদযাপন
আসাদের পতনের খবর শুনে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ ও প্রবাসী নাগরিকরা উল্লাস করছে। সীমান্ত ক্রসিংগুলোতে সিরিয়ানদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
বিদ্রোহীদের অভিযানের উল্লেখযোগ্য দিনগুলো
- ২৭ নভেম্বর: বিদ্রোহীদের অভিযান শুরু।
- ৩০ নভেম্বর: বিদ্রোহীরা আলেপ্পোর বড় অংশ দখল করে।
- ৫ ডিসেম্বর: হামা শহরের পতন।
- ৭ ডিসেম্বর: বিদ্রোহীরা হোমস দখল করে।
- ৮ ডিসেম্বর: ভোরে বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখলের ঘোষণা দেয় এবং পরে আসাদ পালানোর খবর জানায়।
নতুন অধ্যায়ের সূচনা
দামেস্কের উমায়াদ মসজিদে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিদ্রোহী নেতা আবু মোহাম্মেদ আল-জোলানি বলেছেন, "এটি পুরো মুসলিম জাতির জয় এবং সিরিয়ার জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের শুরু।"
What's Your Reaction?