১৭ বছর পর কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে থেকে মুক্তি পেলেন মালিক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন আরও এক বন্দি। তিনি হলেন মোহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু, যিনি গত ১৭ বছর ধরে এই কারাগারে বন্দি ছিলেন। বর্তমানে তিনি নিজ দেশে, কেনিয়ায় ফিরেছেন।

Dec 18, 2024 - 06:59
 0  1
১৭ বছর পর কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে থেকে মুক্তি পেলেন মালিক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন আরও এক বন্দি। তিনি হলেন মোহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু, যিনি গত ১৭ বছর ধরে এই কারাগারে বন্দি ছিলেন। বর্তমানে তিনি নিজ দেশে, কেনিয়ায় ফিরেছেন।

বাজাবুর মুক্তির পর, গুয়ানতানামো বে কারাগারে এখন ২৯ জন বন্দি অবস্থান করছেন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর, পেন্টাগন, গত মঙ্গলবার বাজাবুর মুক্তি ঘোষণা করে। পেন্টাগন জানায়, গত মাসে বাজাবুর কেনিয়ায় প্রত্যাবাসনের বিষয়টি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন কংগ্রেসকে অবহিত করেছিলেন।

২০০৭ সালে কেনিয়ার মোম্বাসায় আবদুল মালিক বাজাবুকে গ্রেফতার করা হয় এবং কয়েক সপ্তাহ পর তাকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে আল-কায়েদার পূর্ব আফ্রিকার শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল।

২০২১ সালে গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দিদের পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত একটি পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয় যে, বাজাবু আর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কোন হুমকি তৈরি করছেন না এবং তাকে আটকিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই।

বাজাবুর মুক্তি প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছে ‘রিপ্রাইভ ইউএস’ নামক একটি সংগঠন, যা বাজাবুর মুক্তি স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনটি দাবি করেছে যে, বাজাবু কেনিয়ার কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

বাজাবুর মুক্তিপ্রক্রিয়ায় সহায়তা করা একজন আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এক নিরীহ ব্যক্তিকে তার জীবনের সেরা সময়গুলোতে বন্দি রেখেছিল, তাকে এমন একটি সময়ে তার পরিবারের কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল, যখন তারা তার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় ছিলেন।

২০০২ সালে, নাইন-ইলেভেন হামলার পর, তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ চালানোর অংশ হিসেবে গুয়ানতানামো বে কারাগার স্থাপন করা হয়। এটি কিউবার একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থিত এবং একটি সামরিক কমিশনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যেখানে প্রথাগত আদালতের মতো সুবিধা থাকে না।

এই কারাগারে বন্দিদের উপর ব্যাপক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে, এবং অনেক বন্দিকে বিনা অভিযোগে আটক রাখা হয়। এমনকি তাদের আটক থাকার কারণ জানারও কোন আইনি অধিকার নেই। একসময় এই কারাগারে ৮০০ বন্দি ছিল, তবে বর্তমানে সেখানে ২৯ জন বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করার জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছে।

এছাড়া, অনেক বন্দি একসময় সিআইএ’র গোপন স্থানে ছিল, যেখানে তাদের ব্যাপক নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো। এই কার্যক্রমে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ অনুমোদন দিয়েছিলেন।

ব্যাপক সমালোচনার পর, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তবে আইনি জটিলতা এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে তার এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি।

সূত্র: আল-জাজিরা

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow