ন্যায়বিচারের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানালেন আলাল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মো. মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, "আমাদের বিরুদ্ধে যে অসংখ্য মিথ্যা মামলা এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলা হয়েছে, তা তুলে নেওয়ার জন্য সরকার এখন দাবাড়ুদের মতো দাবার গুটি সাজিয়েছে। এমনটি হলে তা হবে, আর অন্যটি হলে এটি হবে—এটা ন্যায়বিচার নয়, ন্যায়বিচার হলো 'জাস্টিস'। আমরা এই সরকারের কাছে জাস্টিস চাই, ন্যায়বিচার চাই।"

শনিবার, রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদের আয়োজনে সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক ছাত্রনেতা জাকির খানসহ সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আরও বলেন, "বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ অনেক নেতাকর্মীর নামে যে মিথ্যা মামলা রয়েছে, তা কেন এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি? যে মামলাগুলোর বিচার হয়েছে, সেগুলোর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান নিজে। একদিকে বেগম খালেদা জিয়া দুই কোটি টাকা এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন, আর সেই মামলায় যেই বিচারক তাকে ১২ বছরের সাজা দিয়েছিলেন, তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে বিচারপতি বানানো হয়েছে।"

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, "গোটা বিচার বিভাগকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিচারপতি খায়রুল হক এবং ওবায়দুল হাসানদের দিয়ে মানুষকে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এবং সরকারের (অন্তর্বর্তীকালীন) প্রধানরাও এটা স্বীকার করছেন।"

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, "আপনি কোথাও এমন জায়গা পাবেন না, যেখানে কোনও রাজনৈতিক দল টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে গণঅভ্যুত্থানের কারণে তাদের সমস্ত সহযোগী দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে একসময় দেশছাড়া করেছিলেন, আজ দেশের মানুষ আপনাকে দেশছাড়া করেছে।"

তিনি আরও বলেন, "গতকাল একজন আইনের বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা মারা গেছেন। জীবিত থাকাকালীন তিনি আইনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কিন্তু তার বাস্তব প্রয়োগ আমরা এখনও দেখতে পাইনি। আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে, আমাদের দাবি—বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের মামলাগুলো বাতিল করা হোক, ঠিক তেমনি আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর এবং জাকির খানের মামলাগুলোরও বাতিল হওয়া উচিত।"

তিনি বলেন, "আজ যারা দেশ পরিচালনা করছেন, তারা সর্ববৃহৎ হোঁচট খেয়েছেন দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে না পারার কারণে। সাধারণ মানুষ এখন প্রশ্ন করে বলছে, সংসার নাকি সংস্কার? কারণ, মানুষ এখন সংসারই চালাতে পারছে না। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধি তাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।"

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ কামাল আহমেদ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পারভেজ মল্লিক, এল কে রনি, দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ আরও অনেকে।