শীতের আগমনের মধ্যেও ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব কমেনি। বিশেষত, শিশুরা জ্বর উঠলে তাদের অভিভাবকেরা অধিকাংশ সময় ডেঙ্গু নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। তবে, সব শিশুর ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও চিকিৎসা একরকম নয়, এবং সবকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন নেই। তবে কিছু গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। নিচে এমন সাতটি লক্ষণ উল্লেখ করা হলো, যা দেখা দিলে হাসপাতালে দ্রুত ভর্তি হওয়া উচিত:
গুরুতর লক্ষণসমূহ:
- তীব্র জ্বর (১০২ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট)
- তীব্র মাথাব্যথা
- চোখের পেছনে ব্যথা
- মাংসপেশি ও হাড়ে ব্যথা
- তীব্র বমিভাব
- খাবারে অরুচি
- মাথা ঘোরা বা দুর্বল অনুভব করা
সাধারণত, জ্বরের দুই-তিন দিনের মধ্যে বা জ্বর কমার পর এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়।
ডেঙ্গু এবং চিকিৎসা:
ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় এটি সাধারণত নিজে থেকেই সুস্থ হয়ে যায়। তবে এর একমাত্র চিকিৎসা হল শরীরের পানিশূন্যতা দূর করা। যদি রোগ তীব্র হয়, তাহলে নির্দিষ্ট মাত্রায় শিরায় স্যালাইন দেওয়ার মাধ্যমে জটিলতা কমানো যায়।
যেসব শিশু আগে থেকেই কিডনি, রক্ত বা লিভারজনিত রোগে আক্রান্ত, বা বিশেষায়িত ওষুধ সেবন করছে, তাদের জন্য জ্বর শুরু হওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
প্লাটিলেট সংখ্যা:
ডেঙ্গু জ্বর হলে অনেক অভিভাবক প্রথমেই প্লাটিলেট সংখ্যা নিয়ে চিন্তিত হন। তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্লাটিলেট কমে যাওয়ার সমস্যা খুব কম শিশুদের হয়। সাধারণত, রোগীরা পানিশূন্যতা, বুক ও পেটে পানি জমা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসেন, যার চিকিৎসা শুধুমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতালে সম্ভব। চিকিৎসা দ্রুত শুরু না করলে, এটি মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা প্রাণঘাতীও হতে পারে।
করণীয়:
শিশুর জ্বর শুরু হলে দ্বিতীয় দিনেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষা করা, এবং প্রয়োজন হলে প্রতিদিন সিবিসি পরীক্ষা করা উচিত। ডেঙ্গুর তীব্রতার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া উচিত।
ডা. মানিফা আফরিন
সহযোগী অধ্যাপক, শিশু ও নবজাতক রোগ, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ,