বাড়ি বিক্রি করে ভাড়া বাসায় ছেলেটি, বাইরে দিন কাটাচ্ছেন সত্তরোর্ধ্ব মা

সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা পুষ্প বড়ুয়া। বার্ধক্যজনিত রোগে চলাফেরা করতে কষ্ট হচ্ছে। এই মূহুর্তে ছেলে দেবু বড়ুয়া ভিটে-বাড়ি বিক্রি করে ভাড়ায় বাসায় থাকছেন। আর মা বাইরে বাইরে দিন কাটাচ্ছেন। এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড সৈয়দবাড়ি এলাকায়। 

Dec 1, 2024 - 10:27
 0  1
বাড়ি বিক্রি করে ভাড়া বাসায় ছেলেটি, বাইরে দিন কাটাচ্ছেন সত্তরোর্ধ্ব মা

সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা পুষ্প বড়ুয়া। বার্ধক্যজনিত রোগে চলাফেরা করতে কষ্ট হচ্ছে। এই মূহুর্তে ছেলে দেবু বড়ুয়া ভিটে-বাড়ি বিক্রি করে ভাড়ায় বাসায় থাকছেন। আর মা বাইরে বাইরে দিন কাটাচ্ছেন। এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড সৈয়দবাড়ি এলাকায়। 

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ মাস আগে পুষ্পর একমাত্র ছেলে দেবু ভিটে-বাড়ি বিক্রি করে ভাড়া বাসায় চলে যান। বসতঘর বিক্রি করে দেওয়ার পর ক্রেতারা জায়গাসহ ঘর দখলে নেওয়ার পর পুষ্পকে বের করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে পথে পথে দিন কাটাচ্ছেন এই বৃদ্ধা। ৪ মাস ধরে গ্রামের একেকজনের ঘরে রাত কাটালেও এখন কেউ আর ঘরে রাখার ঝুঁকি নিচ্ছেন না। গত এক মাস ধরে বাইরে রাত কাটাচ্ছেন এই বৃদ্ধা। 

স্থানীয় যুবক জিকু বলেন, ‘মাকে কিভাবে ছেলে ঘর থেকে বের করে দিতে পারে। বিষয়টি অমানবিক। ওই বৃদ্ধা শীতে ঘরের বাইরে রাত কাটানো দেখে স্থানীয় যুবকসহ আমি ইউএনও ও থানার ওসির কাছে যাই। তারা বিষয়টি স্থানীয় সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিকে সমাধান করতে ফোনে বলে দেন।’

বৃদ্ধার এমন অমানবিক ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় প্রীতম মুৎসুদ্দী ও মো. জীবনসহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখছেন। তারা বিষয়টি দেখতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। 

স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বৌদ্ধ সংগঠনের নেতা অশোক তালুকদার বলেন, বৃদ্ধার বিষয় নিয়ে ইউএনও ও ওসি আমাদের যোগাযোগ করতে বললে যোগাযোগ করেছি। দেবু জানিয়েছেন- পুষ্প বড়ুয়া তার মা নয়। তিনি বিধিসম্মতভাবে জায়গা বিক্রি করেছেন দাবি করেছেন। বিষয়টি ইউএনও ও ওসি যখন বলেছেন- আমরা সামাজিকভাবে বসে যাতে ওই নারী থাকার জায়গা পান সেই পদক্ষেপ নেব। 

পুষ্পর সঙ্গে ছেলের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি পুত্রবধূকে দায় করলেও ছেলের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেননি।  

এই বিষয়ে অভিযুক্ত দেবুর বক্তব্য নিতে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএন) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর আমি ওই গ্রামের গণ্যমান্য লোকজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। তাদেরকে বলেছি, ওই বৃদ্ধা নিজের বসতঘরে থাকার বিষয় নিয়ে কোনো জটিলতা থাকলে এটা আইনিভাবে সমাধান করবেন। তবে ওই বৃদ্ধাকে মানবিক কারণে যাতে দ্রুত রাতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ’

পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর অপসারণের পর ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি না থাকায় দায়িত্ব পান রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম। বৃদ্ধার বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন যুবক বিষয়টি আমাকে জানালে আমি থানার একজন এসআইকে (উপ-পরিদর্শক) বিষয়টি দেখতে দায়িত্ব দিয়েছি। ওই বৃদ্ধাকে একটা থাকার ব্যবস্থা করতে বলেছি।’

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow