জিমন্যাস্টিক্সকে অস্থিতিশীল করতে কাওসারের ষড়যন্ত্র!

বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে ২০ বছর আগে দেশে ফিরে না আসা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাবেক কোচ মো. কাওসার, এবার অভিযোগের মুখে পড়েছেন। সাবেক জিমন্যাস্টদের দাবি, কাওসার বর্তমানে জিমন্যাস্টিক্সের অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে চেষ্টা করছেন এবং খেলাধুলার গতিশীলতা রুদ্ধ করছেন।

Dec 23, 2024 - 04:53
 0  2
জিমন্যাস্টিক্সকে অস্থিতিশীল করতে কাওসারের ষড়যন্ত্র!

বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে ২০ বছর আগে দেশে ফিরে না আসা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাবেক কোচ মো. কাওসার, এবার অভিযোগের মুখে পড়েছেন। সাবেক জিমন্যাস্টদের দাবি, কাওসার বর্তমানে জিমন্যাস্টিক্সের অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে চেষ্টা করছেন এবং খেলাধুলার গতিশীলতা রুদ্ধ করছেন।

অভিযোগে আরও জানা গেছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক নতুন কমিটি গঠনের আগেই কাওসার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জিমন্যাস্টিক্সকে নিয়ে নানা কটূক্তি ও সমালোচনা করছেন। সাবেক জিমন্যাস্টরা অভিযোগ করেন, তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় সুযোগ নিয়ে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

এ বিষয়ে সাবেক জাতীয় জিমন্যাস্ট এবং বর্তমান কমিটির সহসভাপতি আহমেদুর রহমান বাবলু তার ফেসবুকে লেখেন, "মোহাম্মদ কাওসার একজন ভালো জিমন্যাস্ট ছিলেন এবং কয়েকবার সেরা জিমন্যাস্টও হয়েছেন। তবে লেখাপড়া শেষ না করেই কোচ হওয়ার জন্য তিনি দ্রুত পাতিয়ালা চলে যান এবং পরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে কোচ হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৪ সালে তিনি তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান দিপুকে জুতা দিয়ে আঘাত করেছিলেন, যার কারণে জিমন্যাস্টিক্স পরিষদ তার অপসারণ দাবি করে। পরবর্তীতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে কাওসারের চাকরি চলে যায়।"

তিনি আরও বলেন, "১৯৯৬ সালের পর আওয়ামী সরকারের সময় তিনি ফ্যাসিস্ট ঘরানার লোক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন এবং ক্রীড়া পরিষদে আবার চাকরি নেন। তবে, ২০০৪ সালে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাজ্যে পাঠানো হলে তিনি পালিয়ে যান, যার কারণে তাকে আবার চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।"

এদিকে, কাওসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি ক্রীড়াঙ্গনের কর্মকর্তাদের মামলা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি ফেসবুকে লিখেন, "বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ মামলার সম্মুখীন হতে পারে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে আশা করি, শিগগিরই বিতর্ক-বিহীন অবশিষ্ট ফেডারেশনগুলোর অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করবেন।"

কাওসারের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "২০০৪ সালে আমি ইংল্যান্ডে একটি কোর্স করার জন্য গিয়েছিলাম, তবে আমার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কারণে দেশে ফিরে আসতে পারিনি। গত পাঁচ বছর জাতীয় জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা হয়নি, অথচ ক্রীড়া পদক ও পুরস্কার পাচ্ছেন কর্মকর্তারা। এটা আমাদের জাতির জন্য লজ্জাজনক।"

তবে কাওসারের দাবি অনেক প্রশ্নের মুখে পড়েছে, বিশেষত ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন কিনা তা নিয়ে। তিনি আরও জানান, "যতটুকু জানি, ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডে কোর্স করতে যাওয়ার সময় আমার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছিল, যার কারণে দেশে ফিরে আসতে পারিনি।" তবে, কাওসারের এ বক্তব্যে কেউ তাকে কেন হত্যা মামলা দেবে, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, অভিযোগে বলা হয়েছে যে, কাওসার বিদেশে থাকার সময় নিজের ছেলে-মেয়েকে স্থায়ীভাবে লন্ডনে রেখে এসেছেন, তবে তিনি এটিকে 'বৃত্তি' হিসেবে চালিয়ে দিয়েছেন। 

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, "এমন ঘটনা আমার জানা নেই। তবে, যদি কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তবে আমরা অবশ্যই তা খতিয়ে দেখব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।"

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow