আবারও অস্থির ডলার বাজার
আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে আমদানি পণ্যের চাহিদা বেড়েছে, যার কারণে দেশের মধ্যে ডলারের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অন্যদিকে আগের বকেয়া এলসি বিল পরিশোধও বেড়েছে, পাশাপাশি বিদেশে ভ্রমণও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ডলারের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায়, এর যোগান তুলনামূলক কমে গেছে।
আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে আমদানি পণ্যের চাহিদা বেড়েছে, যার কারণে দেশের মধ্যে ডলারের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অন্যদিকে আগের বকেয়া এলসি বিল পরিশোধও বেড়েছে, পাশাপাশি বিদেশে ভ্রমণও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ডলারের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায়, এর যোগান তুলনামূলক কমে গেছে। অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য ব্যাংকগুলো ১২০ টাকা ঘোষিত ডলারের চেয়ে ৮-৯ টাকা বেশি দামে রেমিট্যান্স কিনছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে খোলাবাজারেও। এ সুযোগে কিছু অসাধু চক্র বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে।
**খোঁজ নিয়ে জানা গেছে**, ব্যাংকগুলো ডলার সংকটের কারণে রেমিট্যান্স কিনছে সর্বোচ্চ ১২৮ টাকায়, যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত দাম ১২০ টাকা। অন্যদিকে খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে ১২৯ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১২৩-১২৪ টাকা।
রবিবার রাজধানী ঢাকার মতিঝিল এবং দিলকুশা এলাকার মানি চেঞ্জার হাউজগুলোতে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
হঠাৎ করে ডলারের চাহিদা বাড়ায় কিছু অসাধু চক্র এই পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে ডলারের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে। এই অবস্থায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সন্দেহভাজন অন্তত ১৩টি ব্যাংকের কাছে ডলার বেচা-কেনার তথ্য চেয়ে তলব করেছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে মনিটরিং কার্যক্রমও জোরদার করা হয়েছে।
ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি মাসের মধ্যে পুরোনো আমদানি দায় পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে, যার কারণে ব্যাংকগুলো বেশি দামে ডলার কিনছে। এর ফলে প্রবাসী আয়ও বেশি আসছে। চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে ২ বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে, যা বাংলাদেশের মোট রিজার্ভকে ২৪.৯৫ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছে। আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম হিসাবে এটি দাঁড়িয়েছে ১৯.৯৫ বিলিয়ন ডলারে, এবং ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ প্রায় ১৫.১৪ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর সর্বোচ্চ ডলার রেট ১২০ টাকা, যা গত জুনে ছিল ১১৮ টাকা এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিল ১১০ টাকা। গত এক বছরে ডলারের ঘোষিত দর ১০ টাকা বেড়েছে, এবং বাজারের বাস্তবতার সাথে তুলনা করলে তা বেড়েছে ১৮ টাকা।
মতিঝিলের একটি একচেঞ্জ হাউজের বিক্রয়কর্মী আল আমিন জানিয়েছেন, বর্তমানে প্রতি ডলার ১২৭.৫০ টাকায় কেনা হচ্ছে, এবং ১২৮.৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিকেলের দিকে বিক্রির দাম ১২৯ টাকা পর্যন্ত পৌঁছায়। মাত্র ১০ দিন আগেও খোলাবাজারে ডলারের দাম ছিল ১২৩-১২৪ টাকা। বিশেষ করে ডিসেম্বরে বিদেশে ছুটি কাটাতে যাওয়ার কারণে ডলারের চাহিদা বেড়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেছেন, "ডলারের বাজার অস্থিরতা তদন্ত করতে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। তারা মনিটরিং জোরদার করেছে এবং ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন কয়েকটি ব্যাংকের ডলার লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। কয়েকটি ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের তথ্য সরবরাহ করেছে। পরবর্তী ব্যবস্থা সবার তথ্য পর্যালোচনা করে নেওয়া হবে।"
What's Your Reaction?