ক্যান্সার একটি অত্যন্ত জটিল রোগ যা বর্তমানে বিশ্বের নানা অঞ্চলে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি শরীরের কোনো অংশে কোষের অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার ফলে হয়। সাধারণত, প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে এবং সঠিক চিকিৎসা নেওয়া হলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. হাসান শাহরিয়ার কল্লোল বলেন, ক্যান্সার কতটা দ্রুত ছড়াবে, সেটি সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। এটি কোন স্টেজে ধরা পড়েছে এবং লক্ষণগুলো কতটুকু স্পষ্ট হয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে।
বিশ্বে এমন অনেক ক্যান্সার রয়েছে, যার চিকিৎসায় অনেক উন্নতি হয়েছে এবং সেগুলোতে সুস্থ হওয়ার হারও অনেক বেশি।
এক্ষেত্রে, ক্যান্সারের মধ্যে কিছু এমনও রয়েছে যেগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে চিকিৎসা সহজ হয়, আর কিছু ক্যান্সার এমন যে তারা ধীর গতিতে ছড়ায়, তবে দেরিতে শনাক্ত হলে চিকিৎসা কঠিন হয়ে পড়ে।
বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা, যেমন এনএইচএস (ইংল্যান্ড), ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট (যুক্তরাষ্ট্র) এবং চিকিৎসকরা যেসব ক্যান্সারের সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে কিছু ক্যান্সার আছে যেগুলো তুলনামূলক সহজে চিকিৎসা করা সম্ভব, আবার কিছু ক্যান্সার মারাত্মক হতে পারে।
যেসব ক্যান্সার চিকিৎসায় সহজ, তাদের মধ্যে রয়েছে:
- ব্রেস্ট ক্যান্সার: ধীরগতিতে বাড়ে এবং চিকিৎসায় অনেক উন্নতি হয়েছে।
- প্রোস্টেট ক্যান্সার: সাধারণত পুরুষদের মধ্যে ধীরগতিতে ছড়ায় এবং প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসায় পুরোপুরি সেরে ওঠা সম্ভব।
- কোলন ও রেকটাল ক্যান্সার: প্রাথমিক পর্যায়ে কোলনস্কোপি করে এদের সনাক্ত করা এবং চিকিৎসা করা সহজ।
- পাকস্থলীর ক্যান্সার: প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে চিকিৎসা সফলতার সাথে করা যায়।
তবে, কিছু ক্যান্সার যেমন অগ্নাশয়ের ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, খাদ্যনালীর ক্যান্সার, এবং ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার অনেক বেশি প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে, কারণ এর লক্ষণগুলো সঠিক সময় শনাক্ত করা কঠিন। এই ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসা বেশ জটিল এবং অনেক সময় রোগীরা দেরিতে চিকিৎসকের কাছে আসেন, যা তাদের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
অতএব, ক্যান্সার শনাক্ত হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করলে চিকিৎসার সফলতা বেশি।