রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকার কিছুটা বিভ্রান্তিতে পড়েছে। জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা আওয়ামী লীগকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে, বিএনপি এবং তাদের সমমনা দলগুলো কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রয়েছে এবং দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের পক্ষেই রয়েছে তারা।
বিএনপি চায় যে নির্বাচন দ্রুত আয়োজন করা হোক, তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার এবং দলটিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার বিষয়ে সোচ্চার। তারা নির্বাচনের আগে জরুরি সংস্কার কার্যক্রম শেষ করার এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলার দাবি জানিয়েছেন। ফলে, অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে তাদের অগ্রাধিকার নির্ধারণের বিষয়ে দোটানা সৃষ্টি হয়েছে।
আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে কিনা, এই বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, "এটি ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি। বিএনপি এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। সুতরাং, তারা ইতিমধ্যে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। আমরা দেশের প্রধান দলের মতামতকে উপেক্ষা করতে পারি না।"
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে যে, বিএনপি এখানে একটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, এবং তারা প্রয়োজনে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা প্রতিহত করতে ‘দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের’ হুমকি দিয়েছেন।