গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুর
গাজীপুরের জিরানী ও চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে বিক্ষোভ করেন দুই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করলে উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে হাজারো যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়েন। বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিকরা কয়েকটি বাসও ভাঙচুর করেন।
বিক্ষোভ ও অরাজক পরিস্থিতি
বেতন-ভাতা বকেয়াসহ নানা কারণে গাজীপুরে প্রায় প্রতিদিনই শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গাজীপুরে শত শত গার্মেন্ট কারখানা রয়েছে, কিন্তু দু-একটি কারখানার সমস্যা পুরো শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। একটি কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভে অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের মধ্যেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যা স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
বিক্ষোভের কারণ
পঞ্চম দিনের মতো সকাল ৯টায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের অভিযোগ, মঙ্গলবার সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের আশ্বাস সত্ত্বেও বেতন পরিশোধ করা হয়নি। ফলে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত
অন্যদিকে, জিরানী এলাকায় দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কাজে যাওয়ার পথে নবীনগরগামী পলাশ পরিবহণের একটি বাসের চাপায় ছয় শ্রমিক আহত হন। গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে দুর্ঘটনায় এক নারী শ্রমিক মারা গেছেন, যা শ্রমিকদের উত্তেজিত করে। তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং বেশ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন।
দাবিদাওয়া ও সমাধানের চেষ্টা
দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা দুই কর্মকর্তার পদত্যাগ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ ১২ দফা দাবি জানান। পরে শিল্পপুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সমাধানের আশ্বাস দিলে বেলা ১১টার দিকে শ্রমিকরা সড়ক ছাড়েন।
প্রতিক্রিয়া
দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে কারখানার ব্যবস্থাপক আবু সাঈদ বলেন, "ঘটনাটি কারখানার বাইরে ঘটেছে, আমাদের কোনো সমস্যা নেই।" তবে শ্রমিকদের দাবি সম্পর্কে তিনি অবগত নন।
কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, "সকাল ৯টা থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে, এতে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।"