ট্রাম্পের জমানায় বিনিয়োগের নিরাপদ জায়গা হতে পারে ভারত
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতি, বিশেষত সুরক্ষাবাদী বাণিজ্যনীতি, বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা। এতে উদীয়মান বাজারগুলোতে ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে ভারতের দিকে ঝুঁকছেন। খবর রয়টার্স।
ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি বিশ্ববাজারে অস্থিরতা বাড়াবে, তবে ভারত নিরাপদ বিনিয়োগের গন্তব্য হতে পারে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতি, বিশেষত সুরক্ষাবাদী বাণিজ্যনীতি, বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা। এতে উদীয়মান বাজারগুলোতে ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে ভারতের দিকে ঝুঁকছেন। খবর রয়টার্স।
বিশ্ববাজারে অস্থিরতার প্রভাব
ট্রাম্পের নির্বাচনী বিজয় এবং হোয়াইট হাউসে তাঁর প্রত্যাবর্তনের খবর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে ৬০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করার। এই শুল্কনীতি কার্যকর হলে চীনের অর্থনীতি চাপে পড়বে এবং চীনের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে। পাশাপাশি এশিয়ার অন্যান্য রপ্তানিনির্ভর দেশগুলোর ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ভারতের তুলনামূলক স্থিতিশীলতা
বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যেও ভারত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। ভারতের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এবং প্রবৃদ্ধির হারও ভালো। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা বাজারের ওপর ভারতের নির্ভরতা কম। তাই বিশ্ববাজারের অস্থিরতার প্রভাব থেকে ভারত কিছুটা মুক্ত থাকবে।
স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের চাহিদা ও রুপি স্থিতিশীলতা
ভারতের শেয়ারবাজারে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ফলে রুপি অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতির মুদ্রার তুলনায় স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহব্যবস্থার পরিবর্তন ও ভারতের সম্ভাবনা
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো সরবরাহব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে এবং চীনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ভারতের দিকে ঝুঁকছে। বিশেষত ইলেকট্রনিকস, রাসায়নিক এবং ওষুধ খাতে ভারতের সম্ভাবনা বাড়ছে। সরকারের প্রণোদনামূলক প্রকল্পও (পিএলআই স্কিম) এসব খাতকে আকর্ষণীয় করে তুলছে।
ভারতীয় শেয়ারবাজারে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ
চলতি বছর ভারতের শেয়ারবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ প্রত্যাহার করে নিলেও দেশীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছেন। অক্টোবর মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ১,১২০ কোটি ডলার প্রত্যাহার করলেও দেশীয় বিনিয়োগকারীরা ১,২৭০ কোটি ডলারের শেয়ার কিনেছেন। এতে শেয়ারবাজার স্থিতিশীল থেকেছে।
সরকারি বন্ড ও রুপি বিনিয়োগে সম্ভাবনা
জুরিখভিত্তিক ভন্টোবেল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ভারতের সরকারি বন্ডে বিনিয়োগকে আকর্ষণীয় মনে করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতির স্থিতিশীলতার কারণে রুপিতে বিনিয়োগকারীরা সুদহারজনিত সুবিধা নিতে পারবেন।
উপসংহার
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারকেন্দ্রিক অর্থনীতি বৈশ্বিক অস্থিরতার সময় বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ গন্তব্য হতে পারে। ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও বাণিজ্যযুদ্ধের সম্ভাবনা থাকলেও ভারতের অর্থনীতি ও মুদ্রার স্থিতিশীলতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা জোগাচ্ছে।
What's Your Reaction?