কাজুবাদামে কামড় দিতেই মনে পড়ে, কখনো কখনো অতি ছোট্ট কিছুই হতে পারে এক মহান আনন্দের উৎস—কেউ একজন বলেছিলেন এই কথাটি। বক্তার নাম অজ্ঞাত, কিন্তু তার বক্তব্য শতভাগ সঠিক।
খেতে সুস্বাদু ও পুষ্টি উপাদানে ভরা কাজুবাদাম মুখে দিলে সত্যিই মন ভালো হয়ে যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, খনিজ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি ভিটামিনের দুর্দান্ত উৎসও। তাই অনেকে একে ভিটামিনের প্রাকৃতিক ট্যাবলেট হিসেবে অভিহিত করেন। সন্দেহ নেই, কাজুবাদাম একটি অনন্য পুষ্টির ভাণ্ডার, যা আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা চর্বি, আঁশ ও প্রোটিন হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন কে-সমৃদ্ধ কাজু হাড়ের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। এটি দেহে ওজনের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। লুটেন ও জিয়াক্সাথিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও তামার উপস্থিতি রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। কাজুতে থাকা ফাইটোস্টেরল দেহের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্যানসার (বিশেষত কোলন ক্যানসার) প্রতিরোধেও কাজুবাদাম কার্যকর।
কাজুবাদামের স্বাস্থ্যগুণের কথা তো বললামই, এর বহুমুখী ব্যবহারও রয়েছে। কাজু এমনিতেই সুস্বাদু, কিন্তু যদি অন্য কিছু উপকরণের সঙ্গে মিশানো হয়, তাহলে এর স্বাদ আরও বেড়ে যায়। সালাদ, বিরিয়ানি, মিল্কশেক, লাচ্ছি, ক্ষীর, পায়েশ—এসব খাবারে কাজু যোগ করলে স্বাদ এবং পুষ্টির মান বেড়ে যায়।
কাজু গাছ থেকেই হয় কাজুবাদাম। এই গাছের ফল 'কাজু আপেল'-এর নিচের অংশে থাকে কাজুবাদাম, যেটি খোসাসহ প্রাকৃতিক অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে খোসা ছাড়ানো হয়, এবং খাবারের উপযোগী করা হয়। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি কাজুবাদাম উৎপন্ন হয় আইভরিকোস্টে, যেখানে বছরে ৯ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন কাজু উৎপাদন করা হয়। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত, যেখানে ৭ লাখ ৫২ হাজার মেট্রিক টন কাজু উৎপাদন হয়।
আজ ২৩ নভেম্বর, কাজুবাদাম দিবস। এই দিনটি কাজুপ্রেমী ও কাজুশ্রমিকদের প্রতি সম্মান জানাতে পালিত হয়। যদিও দিবসটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা কবে থেকে শুরু, তা অস্পষ্ট, তবে ২০১৫ সালে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যেখানে এটি সমারোহের সঙ্গে পালিত হয়!