লক্ষ্মীপুরে সেতু ধসে যাতায়াত বন্ধ চার দিন, বাতিল হলো একটি কলেজের পরীক্ষা

লক্ষ্মীপুরে সেতু ধসে যোগাযোগ বন্ধ, দুর্ভোগে লাখো মানুষ

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে রহমতখালী খালের ওপর অবস্থিত সেতুটি ধসে পড়ার কারণে গত চার দিন ধরে স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। এতে পাঁচটি গ্রামের লাখো মানুষ, সহ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

গত রোববার বিকেলে হঠাৎ তীব্র পানির স্রোতে সেতুটি ধসে পড়ে। এর পর থেকে চন্দ্রগঞ্জ-চরশাহী সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে স্থানীয় কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রাক্‌-নির্বাচনী পরীক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।

কলেজের পরীক্ষা স্থগিত

কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রিয়ব্রত চৌধুরী জানান, সোমবার কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রাক্‌-নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেতু ধসে পড়ার কারণে পরীক্ষাসহ অন্যান্য শ্রেণির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সেতু পার হয়ে কলেজে আসতে হয়, তাই দ্রুত একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ না করা হলে তাদের কলেজে আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।

সেতু সম্পর্কে স্থানীয়দের মন্তব্য

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর সেতুটি নির্মাণ করেছিল। সেতুটির দৈর্ঘ্য ছিল ৬০ ফুট এবং প্রস্থ ১০ ফুট। এটি ছিল শেখপুর, রাজাপুর, রামকৃষ্ণপুর, চরশাহী ইউনিয়নসহ নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর-চৌমুহনী সড়কের সাথে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। প্রতিদিন এখান দিয়ে অন্তত ১০ হাজার শিক্ষার্থীসহ লাখো মানুষ যাতায়াত করতেন।

ধসে পড়ার কারণ

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের অনেক খাল ও বিলের পানি এখনও পুরোপুরি নেমে যায়নি। এই পানি রহমতখালী খালের মাধ্যমে প্রবাহিত হচ্ছে, যার কারণে খালে তীব্র স্রোত সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই স্রোতেই সেতুটি ধসে পড়েছে।

স্থানীয় চেয়ারম্যানের বক্তব্য

চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, সেতুটি আগে থেকেই নড়বড়ে ছিল এবং মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেতু ধসে পড়ায় এখন ওই পথ দিয়ে ছোট-বড় কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।

নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ

লক্ষ্মীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকরামুল হক বলেন, সেতু ধসে পড়ার কারণে যানবাহন চলাচলের জন্য এটি অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রহমতখালী খালে তীব্র স্রোতের কারণে সেতুটি ধসে পড়ে। জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ওই স্থানে একটি ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের নতুন সেতু নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং বিকল্প সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।