১৬ ডিসেম্বর বড় কর্মসূচির পরিকল্পনা বিএনপির
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা এবং নির্বাচন রোডম্যাপের দাবিকে আরও জোরালো করার জন্য দশটি সাংগঠনিক বিভাগে বড় সমাবেশ আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির দশ বিভাগে বড় সমাবেশের সিদ্ধান্ত, নির্বাচন রোডম্যাপের দাবি আরও জোরালো
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা এবং নির্বাচন রোডম্যাপের দাবিকে আরও জোরালো করার জন্য দশটি সাংগঠনিক বিভাগে বড় সমাবেশ আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
সোমবার রাতে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী মাস থেকেই এসব সমাবেশ শুরু হতে পারে, এবং শিগগিরই সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ ও সফলতার জন্য টিম গঠন করা হবে।
এছাড়া, নির্বাচনী ইস্যু এবং জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো মনোমালিন্য বা দূরত্ব তৈরি না হওয়ার বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশের পরিকল্পনা
বৈঠকে জানা যায়, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর, কুমিল্লা এবং ফরিদপুরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম থেকে বিভাগের সমাবেশ শুরু হতে পারে।
ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল জানান, ‘‘ঐতিহাসিক র্যালির মাধ্যমে দেশের নেতাকর্মীরা এখন আরও উজ্জীবিত। এবার র্যালিতে সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল, যা শহিদ জিয়াউর রহমানের প্রতি জনগণের ভালোবাসা ও সম্মান প্রমাণ করেছে।’’
নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবি
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, অবিলম্বে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা না হলে আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সোচ্চার হবে দলটি। তারা মনে করছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কার একসঙ্গে চলতে হবে, তাই সরকারকে অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
গত ৪ নভেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই এবং এ কারণে নির্বাচনী রোডম্যাপ না দিলে জনগণের মধ্যে শঙ্কা বাড়বে।
র্যালির মূল্যায়ন
গত শুক্রবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির ঢাকায় অনুষ্ঠিত র্যালি নেতারা অত্যন্ত সফল হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। তারা দাবি করেন, ‘‘এই র্যালি ছিল বিএনপির সবচেয়ে বড় র্যালি, যা নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়।’’
বিএনপি নেতারা বলেন, ‘‘এ র্যালির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শক্তি।’’
সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আলোচনা
বৈঠকে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে তিনজনের অন্তর্ভুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, এর মধ্যে দুজনের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে এবং ছাত্র-জনতা ইতোমধ্যে এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিএনপি মনে করছে, বিতর্ক এড়াতে যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া উচিত ছিল।
জামায়াত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা
বৈঠকে বিএনপি-জামায়াত সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়। নেতারা বলেন, ‘‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক বরাবরই সুসম্পর্ক ছিল। তারা একসঙ্গে আন্দোলন করেছে।’’ তবে, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে ২০ দলীয় জোট ভেঙে দেওয়ার পরও জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ অব্যাহত ছিল।
নেতারা অভিমত ব্যক্ত করেন, ‘‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন ঘটাতে বিএনপি ও জামায়াত একসাথে আন্দোলন করবে। নির্বাচনী ইস্যু এবং জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি না হওয়া উচিত।’’
এছাড়া, বিএনপি মনে করছে, সরকারকে বিতর্কিত পদমর্যাদাসম্পন্ন কাউকে দায়িত্বে না এনে পরিস্থিতি শান্ত রাখা উচিত।
What's Your Reaction?