২০২৫ সালে বিশ্ববাজারে চাহিদার তুলনায় তেলের সরবরাহ বাড়বে: আইইএ
বিশ্ববাজারে ২০২৫ সালে জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। সম্প্রতি সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস প্রদান করেছে।
বিশ্ববাজারে ২০২৫ সালে জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। সম্প্রতি সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস প্রদান করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী কয়েক বছরে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের চাহিদা কমতে পারে। যদিও ওপেক (অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ) এবং সহযোগী দেশগুলো তাদের তেল উত্তোলন হ্রাস করলেও, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোতে উত্তোলন বাড়বে, যার ফলে আগামী বছরে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বাড়তে পারে।
আইইএ জানায়, ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলোর উত্তোলন কমানো সত্ত্বেও ২০২৪ সালে চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত ১০ লাখ ব্যারেল তেল সরবরাহ হতে পারে। এর মূল কারণ চীনের নিম্নমুখী তেল চাহিদা। এতে তেলের দাম আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন বহুজাতিক ব্যাংক জেপি মরগ্যান সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগামী বছরে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারে নেমে আসতে পারে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেলের ক্রেতা চীন, তবে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমছে এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহারের কারণে জ্বালানি তেলের চাহিদা কমছে। চীনে পরিবহন ও অন্যান্য খাতে পুনঃব্যবহারযোগ্য জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমছে। চীন তার নির্ধারিত কার্বন নিঃসরণ হ্রাস লক্ষ্য অনুযায়ী এই পরিবর্তন বাস্তবায়ন করবে।
অপরিশোধিত তেলের বাজার বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ওপেক প্লাস (ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো) আগের মতো তেল উৎপাদন কমানোর পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। এতে বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহ আসবে, যা তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
আইইএ জানায়, আগামী বছরে ওপেক প্লাস-বহির্ভূত দেশগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ১৫ লাখ ব্যারেল তেলের উত্তোলন বাড়তে পারে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, গায়ানা ও আর্জেন্টিনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এদিকে, ২০২৩ সালের জন্য আইইএ পূর্বাভাস দিয়েছে যে, বৈশ্বিক তেলের চাহিদা ৬০ হাজার ব্যারেল বেড়ে দৈনিক গড়ে ৯ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল হতে পারে। তবে চীনের চাহিদার কমতির কারণে, তেলের দাম বেড়েছে এমন কোনো বড় পরিবর্তন ঘটেনি। সম্প্রতি, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা কমে যাওয়ার কারণে তেলের দাম ২ শতাংশের বেশি কমেছে।
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম গত শুক্রবার আগের দিনের তুলনায় ১ ডলার ৫২ সেন্ট বা ২.০৯ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ৭১ ডলার ৪ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দামও ১ ডলার ৬৮ সেন্ট বা ২.৪৫ শতাংশ কমে ৬৭ ডলার ২ সেন্টে নেমে এসেছে।
ডাচ বহুজাতিক ব্যাংক রাবোব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল সম্প্রতি বলেছে, ২০২৫ সালে বাজারে দৈনিক প্রায় ৭ লাখ ব্যারেল অতিরিক্ত তেলের সরবরাহ থাকতে পারে, যা তেলের দাম কমাতে সহায়ক হবে।
What's Your Reaction?