ইমরান খানের বিচার কি সামরিক আদালতেই? যা বলছে ব্রিটেন
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি জানিয়েছেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ থেকে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সামরিক আদালতে বিচার করার ইঙ্গিত দেয়।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি জানিয়েছেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ থেকে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সামরিক আদালতে বিচার করার ইঙ্গিত দেয়।
সম্প্রতি, ইমরান খানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা জুলফিকার বুখারি লেবার পার্টির এমপি কিম জনসনকে একটি চিঠি পাঠান, যাতে ইমরান খানকে সামরিক আদালতে বিচার করার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, কিম জনসনসহ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রায় ২০ এমপি ডেভিড ল্যামির কাছে জানতে চান, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যক্তিকে সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি কেন করা হবে। তারা পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য চান।
এই ২০ এমপি ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে ল্যামিকে অনুরোধ করেন এবং তার আটককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেন। তাদের আশঙ্কা, ইমরান খান সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন এবং তারা এমন কোনো পদক্ষেপকে বেআইনি মনে করেন।
গত কয়েকমাসে সেনা আইনের সংশোধনী এবং সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদের গ্রেপ্তারের পর ইমরান খানের সম্ভাব্য সামরিক বিচার নিয়ে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। ৯ মে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তিনি সামরিক আদালতে বিচার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন। এ কারণে তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেন।
তবে, এক শুনানিতে ফেডারেল সরকার জানিয়েছিল যে সামরিক আদালতে খানের বিচার তাদের পরিকল্পনায় নেই। তবুও, এই বিষয়ে সংশয় রয়ে গেছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে এমন কিছু প্রমাণ রয়েছে, যা তার বিচার সামরিক আদালতে হতে পারে। তবে তিনি প্রমাণের বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ডেভিড ল্যামি বেসামরিক বিচারের জন্য সামরিক আদালতের ব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এই ধরনের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও স্বাধীন তদারকির অভাব তুলে ধরেন। ১১ নভেম্বর কিম জনসনকে লেখা এক চিঠিতে ডেভিড ল্যামি বলেন, যদিও পাকিস্তানের বিচারিক প্রক্রিয়া তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তবুও তারা পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে তাদের আইন অনুযায়ী কাজ করতে এবং আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা, মৌলিক স্বাধীনতা, ন্যায্য বিচার, যথাযথ প্রক্রিয়া ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে আহ্বান জানিয়েছে।
তিনি আরও জানান, ইমরান খান সামরিক বিচারের মুখোমুখি হওয়ার কোনো ইঙ্গিত নেই এবং ব্রিটিশ কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
ল্যামি পাকিস্তানকে গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসনের গুরুত্বের ওপর জোর দিতে বলেছেন, যা ইমরান খানের মামলাতেও প্রযোজ্য, এবং যা সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রসচিবের এই বক্তব্যের ফলে আপাতত পিটিআই দলের জন্য কিছুটা স্বস্তি এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বর্তমানে ইমরান খান বিভিন্ন মামলায় গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
What's Your Reaction?