‘দেশ স্বাধীনের পর তৈরি সংবিধানে কোনো জাতির পিতা ছিল না’

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে এই নয় যে, হাজার হাজার মানুষকে গুম করা হবে, ৬০ লাখের বেশি মানুষকে গায়েবী মামলার আসামি করা হবে, কিংবা বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হবে। যাদের কোনো হাত নেই, তাদেরকে আসামি করে বলা হবে তারা বোমা মেরেছেন। এমনকি হজে থাকা ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এসব কর্মকাণ্ড হতে পারে না।

Nov 13, 2024 - 10:18
 0  1
‘দেশ স্বাধীনের পর তৈরি সংবিধানে কোনো জাতির পিতা ছিল না’

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে এই নয় যে, হাজার হাজার মানুষকে গুম করা হবে, ৬০ লাখের বেশি মানুষকে গায়েবী মামলার আসামি করা হবে, কিংবা বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হবে। যাদের কোনো হাত নেই, তাদেরকে আসামি করে বলা হবে তারা বোমা মেরেছেন। এমনকি হজে থাকা ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এসব কর্মকাণ্ড হতে পারে না।

পঞ্চদশ সংশোধনী সংক্রান্ত রুলের শুনানিতে বুধবার এসব কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সংবিধানের ৭খ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, "সংবিধানের মূলনীতি আর গণতন্ত্র বা সমাজতন্ত্র নয়। আমরা সমাজতন্ত্র বাদ দিতে চাই।" শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান কেউ অস্বীকার করে না, তবে জাতির পিতা নিয়ে দেশে এখনও বিতর্ক রয়েছে এবং জাতি বিভক্ত। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রণীত সংবিধানে জাতির পিতা সংক্রান্ত কোনো উল্লেখ ছিল না, তবে তা পঞ্চদশ সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা তিনি জোর করে চাপিয়ে দেওয়া বলেও উল্লেখ করেন। তার মতে, শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা বলা সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, এবং এর বিরুদ্ধে কথা বললে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়।

তিনি আরও বলেন, "সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ বাতিলের দাবি করছি, কারণ এটি মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে। পৃথিবীর কোনো দেশে ভাষার ভিত্তিতে জাতি সত্ত্বা নির্ধারণ করা হয় না।" ৭ক ও ৭খ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে তিনি বলেন, এগুলো গণতন্ত্রের পরিপন্থি এবং স্বৈরশাসনকে দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি আইনশাসনের পরিপন্থি।

ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি সংবিধানে থাকা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, "এই দেশে ৯০ ভাগ মুসলমান, এবং আগে আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ছিল, যা আগের মতোই রাখতে চাই।" এছাড়া ২ক অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের সকল ধর্ম পালনে সমান অধিকার ও সম মর্যাদা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে, যা সাংঘর্ষিক মনে করেন তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের কারণে বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, কেন পঞ্চদশ সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না? তার মতে, পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানের অংশ হিসেবে রাখা যাবে না, কারণ এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ৯০-এর গণ অভ্যুত্থান এবং ২৪ জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি আরও বলেন, "এই পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল না হলে আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে না।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow