ভোজ্যতেল নিয়ে বড় সংকটের আশঙ্কা

চট্টগ্রামের বাজারে পেঁয়াজ ও আলুর পর এবার ভোজ্যতেল সংকট দেখা দিয়েছে। দেশের অন্যতম বড় ভোগ্যপণ্য বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার থেকে হঠাৎ করে ভোজ্যতেল উধাও হয়ে গেছে। শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি এবং সংকটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন প্রতিলিটার দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা।

Nov 16, 2024 - 05:41
 0  0
ভোজ্যতেল নিয়ে বড় সংকটের আশঙ্কা

চট্টগ্রামের বাজারে পেঁয়াজ ও আলুর পর এবার ভোজ্যতেল সংকট দেখা দিয়েছে। দেশের অন্যতম বড় ভোগ্যপণ্য বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার থেকে হঠাৎ করে ভোজ্যতেল উধাও হয়ে গেছে। শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি এবং সংকটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন প্রতিলিটার দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছেন, ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার দুই দফা শুল্ক-কর কমালেও সুফল মিলছে না, বরং দাম আরও বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ডলার সংকটসহ অন্যান্য কারণের কারণে আমদানিকারকরা আগের মতো ভোজ্যতেল আমদানি করছেন না। একই সঙ্গে, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার উৎপাদন সংকট ও বায়ো-ডিজেলে পাম অয়েলের ব্যবহারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

দেশে শুল্কছাড়ের মাধ্যমে বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও চাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলের দাম বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে পেঁয়াজের দাম মাত্র দুদিনে কেজিপ্রতি বেড়েছে, আর ভোজ্যতেলের দাম ৪৫-৫০ টাকা বেড়েছে কয়েক মাসের মধ্যে। একইভাবে, চালের দামও ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে প্রতি বস্তায়। তবে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে এবং মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। বাজার মনিটরিং চালু থাকলেও চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ অন্যান্য বাজারে পণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। অনেক সময় বাজারে সরকারের নির্ধারিত দামেও পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা বিশ্ববাজারে বুকিং বেড়ে যাওয়া এবং আমদানির সংকটের কথা উল্লেখ করেছেন। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে প্রতি মন সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৬,৮৭৫ টাকায়, যার ফলে খুচরা বাজারে সয়াবিনের প্রতি লিটার দাম দাঁড়াচ্ছে ১৭১ টাকা, যা সরকারের নির্ধারিত মূল্য থেকে ৫-৭ টাকা বেশি। পাম অয়েলের দামও বেড়ে গিয়ে প্রতি মন ৬,৫০০ টাকা হয়েছে, যা খুচরা বাজারে আরও ২০০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, গত মাসে সরকার ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সয়াবিন ও পাম অয়েলের ওপর আরোপিত ভ্যাট মওকুফ করে দিয়েছিল। তবে, সরবরাহ সংকট এবং দাম বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

খাতুনগঞ্জের এক ভোজ্যতেল আড়তদার কামরুল ইসলাম বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে, আর সরবরাহ কমে যাওয়ায় তা আরও এক দফা বেড়েছে। পাম অয়েলের দাম সয়াবিনকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় সয়াবিনের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে দাম কমার সম্ভাবনা কম।"

এদিকে, চট্টগ্রামের শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমেছে, তবে গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছের দামও বেড়ে গেছে, তবে পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়ার দাম কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগি ও দেশি মুরগির দামও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow