শিথিলতার সুযোগে সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা হচ্ছে

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ধর্মীয় নেতাদের সংলাপে অংশগ্রহণ করেছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। সংখ্যালঘু নির্যাতন, ভারতে অপপ্রচার, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার, মাজার ভাঙা, লালনমেলা বন্ধ করা সহ নানা বিষয়ে তিনি জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকার দেন।

Dec 7, 2024 - 05:02
 0  2
শিথিলতার সুযোগে সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা হচ্ছে

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ধর্মীয় নেতাদের সংলাপে অংশগ্রহণ করেছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। সংখ্যালঘু নির্যাতন, ভারতে অপপ্রচার, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার, মাজার ভাঙা, লালনমেলা বন্ধ করা সহ নানা বিষয়ে তিনি জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকার দেন।

ডয়চে ভেলে: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ধর্মীয় নেতাদের বৈঠকে আপনি উপস্থিত ছিলেন, সেখানে সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব ছিল?

ফরহাদ মজহার: না, সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব সব সময় সম্ভব হয় না। বেশিরভাগই উপস্থিত ছিল। তবে আমি বলেছি, যারা মূলত আন্দোলন করেছে, যেমন সনাতন জাগরণ মঞ্চ বা হিন্দু মহাজোট, তারা উপস্থিত ছিল না। তারা মূলত আন্দোলনটা করেছে। এটি ছিল ধর্মীয় প্রতিনিধিদের সম্মেলন, রাজনৈতিক গ্রুপকে ডাকা হয়নি।

ডয়চে ভেলে: আপনি লালন ও মাজারে হামলা নিয়ে কথা বলেছেন।

ফরহাদ মজহার: আমি মানুষের অধিকার ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কথা বলি, ধর্মীয় অধিকার নিয়েও কথা বলি। মাজার ভাঙার বিষয়টি আমি উল্লেখ করেছি। যারা মাজার ভেঙেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি, কিন্তু চিন্ময়কে (চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা আমি প্রশ্ন করেছি।

ডয়চে ভেলে: নারায়ণগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় লালন ভক্তদের অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হয়নি।

ফরহাদ মজহার: হ্যাঁ, সেটাও আমি উল্লেখ করেছি।

ডয়চে ভেলে: তাহলে যারা লালনভক্তদের অনুষ্ঠান করতে দিলো না এবং মাজারে হামলা করেছে, তাদের সরকার গ্রেপ্তার কেন করল না?

ফরহাদ মজহার: এটা আপনাকে সরকারকে জিজ্ঞেস করতে হবে। যারা মাজার ভাঙেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। আপনাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রশ্ন করতে হবে।

ডয়চে ভেলে: আপনি কি মনে করেন, ওই বৈঠকটি সব ধর্মের প্রতিনিধিত্বশীল ছিল?

ফরহাদ মজহার: আমি সঠিক উত্তর দিতে পারব না, কারণ সেখানে সবার পরিচয় আমার সামনে ছিল না। সরকারের উদ্দেশ্য ছিল একটি সম্প্রীতির সভা আয়োজন করা। সরকারও দাবি করছে না যে এটি সম্পূর্ণ প্রতিনিধিত্বশীল ছিল। তবে, সরকার ভারতের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এই সভা আয়োজন করেছে এবং সেখানে উপস্থিত সকলেই তাদের নিজ নিজ ধর্মের পক্ষ থেকে সুন্দরভাবে কথা বলেছেন।

ডয়চে ভেলে: সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ নিয়ে কিছু অভিযোগ রয়েছে। আপনি কি মনে করেন, সত্যিই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে?

ফরহাদ মজহার: অবশ্যই সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। গরিব মানুষদের ওপর আক্রমণ হয়েছে, তাদের জায়গা দখল হয়েছে। এই ঘটনা সম্পর্কে আমি মিথ্যা বলব না।

ডয়চে ভেলে: সরকারের প্রতিরোধ ব্যবস্থা কি যথেষ্ট ছিল?

ফরহাদ মজহার: আমি মনে করি, সরকার একটি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। সরকার শিথিলভাবে ক্ষমতায় রয়েছে এবং কিছু কিছু জায়গায় উৎখাতের চেষ্টা চলছে। সরকার যদি বিব্রত না করত, তাহলে চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের কোনো যুক্তি থাকত না। তিনি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছিলেন। তার বক্তব্যে কোনো উসকানি ছিল না।

ডয়চে ভেলে: সরকার বলছে, চিন্ময় বাবু উসকানি দিয়েছেন। আপনি কি তা মনে করেন?

ফরহাদ মজহার: উসকানি দিলে তা শুনতে হবে, কিন্তু মাজার ভাঙা মানুষদের কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি? এটাই প্রশ্ন।

ডয়চে ভেলে: তারা যেসব দাবি করেছে, সেগুলো কি যথাযথ ছিল?

ফরহাদ মজহার: তাদের দাবি গুলি সম্পূর্ণ জেনুইন। তারা তিন দিন ছুটি চেয়েছে, আপনি দুই দিন দিয়েছেন। আরেক দিন বাড়ালে কী এমন সমস্যা? তারা সংস্কৃত এবং পালি পড়তে আলাদা বোর্ড চেয়েছে। এতে কী সমস্যা? এসব আলোচনা করে সমাধান করা যেতে পারে। তাদের কোনো রাজনৈতিক দাবি ছিল না।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow