আমি আর সংসারী হতে চাই না: শাবনূর
নব্বই দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। নিজের ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন তিনি, যা আজও দর্শকদের মনে অমলিন। তবে তিন দশকের ক্যারিয়ারের শেষ ভাগটি ছিল অনেকটাই রঙহীন। কিছু বছর ধরে তিনি অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছেন এবং প্রবাসে জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে তার বেশিরভাগ সময় কাটে অস্ট্রেলিয়ায়, ছেলে আইজানকে নিয়ে।
নব্বই দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। নিজের ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন তিনি, যা আজও দর্শকদের মনে অমলিন। তবে তিন দশকের ক্যারিয়ারের শেষ ভাগটি ছিল অনেকটাই রঙহীন। কিছু বছর ধরে তিনি অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছেন এবং প্রবাসে জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে তার বেশিরভাগ সময় কাটে অস্ট্রেলিয়ায়, ছেলে আইজানকে নিয়ে।
আজ (১৭ ডিসেম্বর) জীবনের ৪৬ বছরে পা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। ৪৬তম জন্মদিনে তাকে স্মরণ করছেন তার অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী, যারা সামাজিক মাধ্যমে ছবি এবং শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে তুলেছেন শাবনূরকে।
এদিকে, জন্মদিন উপলক্ষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন শাবনূর। সেসময় নিজের জীবনের নানা কঠিন মুহূর্তের কথা প্রকাশ করেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নানা ঝড়-ঝাপটার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে, যা আজও তার মনে রয়ে গেছে। আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, "দেড় যুগের ক্যারিয়ারে যে ঝড়ঝাপটা আমি দেখেছি, তা পৃথিবীর আর কোনো শিল্পী বোধহয় সয়ে উঠতে পারেনি। প্রথম ছবি 'চাঁদনী রাতে'র প্রযোজক, সালমান শাহ, রিয়াজ, ফেরদৌস এবং এক বিদেশি নাগরিকের সঙ্গে মিথ্যে সম্পর্কের গুঞ্জন, সালমানের হত্যা/আত্মহত্যার অভিযোগ, একাধিকবার এফডিসির ব্যান—এসব কী ফেস করতে হয়নি আমাকে? একইসঙ্গে পারিবারিক সমস্যাগুলোও আমাকে অসহ্য করে তুলেছিল।"
শাবনূর জানান, ব্যক্তিগত জীবনে এক কঠিন বিচ্ছেদ তাকে আরও বেশি অভ্যস্ত করে তোলে। তবে, তিনি নিজেকে সামলে নিয়েছেন এবং তার জীবনে কখনোই মাদক কিংবা আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকেননি। "অন্য কেউ হলে হয়তো পাগল হয়ে যেত, কিন্তু আমি মনের জোরে সব কিছু অতিক্রম করে জীবনটাকে পজিটিভভাবে গড়ে তুলেছি," বলেন শাবনূর।
বিচ্ছেদের পর সংসারী হওয়ার ইচ্ছে নেই, এটি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন তিনি। "বিয়ের পর যদি স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হয়, তা যে কোনো নারীর জন্য ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক, এ কারণে আমি ডিভোর্স দিতে বাধ্য হয়েছিলাম," বলেন শাবনূর। তিনি আরও জানান, "এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য, ছেলে আইজানকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং তাকে সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।"
অভিনয়ে ফিরে আসার বিষয়ে শাবনূর জানান, "গত বছর 'রঙ্গনা' ছবির শুটিং শুরু করেছিলাম, তবে নানা কারণে তা শেষ হয়নি। তবে শিগগিরই কাজ শুরু করতে চাই।"
শাবনূরের ব্যক্তিগত জীবন ছিল বেশ কঠিন। ২০২০ সালে তার সংসার ভেঙে যায়। ২০১2 সালে অনিক মাহমুদ হৃদয়কে বিয়ে করেছিলেন, এবং তাদের এক পুত্র সন্তান আইজান নিহান রয়েছে। কিন্তু সংসারে অশান্তি এবং নির্যাতনের কারণে 2020 সালে শাবনূর তার স্বামীকে তালাক দেন। তালাকের নোটিশে তিনি জানিয়েছিলেন, "অনিক আমাকে এবং সন্তানকে যথাযথ যত্ন দেন না, তিনি মাদকাসক্ত এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। এসব কারণে আমার জীবনে অশান্তি নেমে এসেছে।"
শাবনূরের সংগ্রামী জীবন একেকটি অধ্যায় হয়ে থাকবে তার ভক্তদের হৃদয়ে, এবং তার সাফল্য ও সংগ্রামের গল্প আজও সবার মুখে মুখে।
What's Your Reaction?