বাংলাদেশি রোগী পরিবহন করতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। এসব বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বেশ কিছু ভারতীয় হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। তবে মুখে ভিন্ন কথা বললেও, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আদতে বাংলাদেশি রোগীদের আকর্ষণ করতে চায়, এবং সেই উদ্দেশ্যে দেশটির অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছে।
**ভারতে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সেবা বন্ধের ঘোষণা, তবে আসল উদ্দেশ্য ভিন্ন**
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। এসব বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বেশ কিছু ভারতীয় হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। তবে মুখে ভিন্ন কথা বললেও, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আদতে বাংলাদেশি রোগীদের আকর্ষণ করতে চায়, এবং সেই উদ্দেশ্যে দেশটির অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছে।
বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী দলগুলো বাংলাদেশি রোগীদের বয়কটের বিষয়ে উত্তেজনা তৈরি করেছে। এমনকি, বিজেপির নেতারা বাংলাদেশে জরুরি পণ্য সরবরাহ বন্ধেরও হুমকি দিয়েছেন। তবে এসব পদক্ষেপ মূলত ভোটব্যাংক বাড়ানোর কৌশল হিসেবে দেখাচ্ছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এসব সুর চড়ানো হচ্ছে—এটা দ্রুত পরিষ্কার হচ্ছে।
এদিকে, ভারতের বৃহত্তম সীমান্ত শহর হিসেবে পেট্রাপোলকে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে ভারত। ভারতীয় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন যে, পেট্রাপোলের সঙ্গে কলকাতার মেট্রো সংযোগ স্থাপন এবং নতুন রেল স্টেশন নির্মাণ করা হবে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার মাঝেই শান্তনু ঠাকুর পেট্রাপোলের ভবিষ্যত সম্পর্কে বড় ধরনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, "পেট্রাপোল শীঘ্রই একটি বড় সীমান্ত শহর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। পেট্রাপোল থেকে বাগদা পর্যন্ত রেল স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া, কলকাতা থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা আনার পরিকল্পনাও চলছে। বাংলাদেশ থেকে লাখ লাখ রোগী কলকাতায় চিকিৎসার জন্য আসেন, তাই এখানে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"
শান্তনু ঠাকুর আরও বলেন, "বাংলাদেশের বর্তমান সরকার আর আগের মতো শক্তিশালী নেই। দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একসময় ছিল, কিন্তু এখন তারা ৫০ বছর পিছিয়ে গেছে। মৌলবাদী শক্তি তাদের সেই জায়গায় নিয়ে গেছে। এমনকি, আমি শুনছি সেখানে সিরিয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে। আমরা এসব সহ্য করব না।"
ভারতের শক্তি ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, "ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী এবং পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। যদি কেউ আমাদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিতে আসে, তবে তা তাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করবে। তবে ভারত সবসময় বাংলাদেশের বন্ধু ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, যদি তারা আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের হাত বাড়ায়। কিন্তু, যদি তারা আমাদের ভাগ করতে আসে, তাহলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না।"
এই সব বক্তৃতার মাধ্যমে ভারতীয় সরকারের বক্তব্য স্পষ্ট যে তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, তবে এক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মান এবং সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
What's Your Reaction?