গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু কতটা ভয়ের

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু গুরুতর একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। এ সময় ডেঙ্গুর সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। কারণ, গর্ভবতী নারীদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা কম থাকে। তা ছাড়া হরমোনের পরিবর্তনের ফলে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও রক্তনালিতে পরিবর্তন ঘটে, যা ডেঙ্গুর মতো ভাইরাসের সংক্রমণের জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করে। গর্ভাবস্থায় কিছু নারীর সাধারণ স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ভালো না–ও থাকতে পারে, যা তাঁদের সংক্রমণের জন্য আরও বেশি সংবেদনশীল করে।

Nov 19, 2024 - 05:08
 0  6
গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু কতটা ভয়ের

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু গুরুতর একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। এ সময় ডেঙ্গুর সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। কারণ, গর্ভবতী নারীদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা কম থাকে। তা ছাড়া হরমোনের পরিবর্তনের ফলে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও রক্তনালিতে পরিবর্তন ঘটে, যা ডেঙ্গুর মতো ভাইরাসের সংক্রমণের জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করে। গর্ভাবস্থায় কিছু নারীর সাধারণ স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ভালো না–ও থাকতে পারে, যা তাঁদের সংক্রমণের জন্য আরও বেশি সংবেদনশীল করে।

ডেঙ্গুর ফলে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন:

  • গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে।

  • শিশুর জন্ম আগে (প্রিম্যাচিউর বার্থ) হতে পারে।

  • কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ডেঙ্গুর সংক্রমণ গর্ভস্থ শিশুর কিছু জন্মগত সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।

  • জন্মের পর শিশুর স্বাস্থ্যের সমস্যা, যেমন রক্তের সমস্যা বা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

গর্ভবতী নারীর ডেঙ্গুর লক্ষণ

জ্বর, শরীরে ব্যথা বা ত্বকে র‍্যাশ। এ অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক চিকিৎসা ও যত্ন নেওয়া হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

ঝুঁকি কমাতে ও সংক্রমণ প্রতিরোধে মশা দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন মশারি ব্যবহার, সুরক্ষিত পোশাক পরা ও মশার প্রজনন স্থান ধ্বংস করা।

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত নারীর মৃত্যুর কিছু প্রধান কারণ

  • ডেঙ্গুর কারণে উচ্চমাত্রায় জ্বর হলে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, যা প্রাণঘাতী পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।

  • কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরে রূপ নিতে পারে, যা রক্তপাতের কারণে জীবনহানির ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

  • ডেঙ্গুতে রক্তের প্লাটিলেট কমে যেতে পারে, যা রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এতে গুরুতর রক্তপাত হতে পারে।

  • ডেঙ্গু গর্ভাবস্থায় অন্যান্য জটিলতা, যেমন প্রি-একলাম্পসিয়া বা একলাম্পসিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যা জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে।

  • কিছু ক্ষেত্রে সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়া বা সঠিক চিকিৎসার অভাবও মায়ের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পরীক্ষা–নিরীক্ষা

  • ডেঙ্গু অ্যান্টিজেন টেস্ট: ডেঙ্গু ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করা। প্রথম দুই দিনের মধ্যে করা উচিত।

  • অ্যান্টিবডি টেস্ট: IgM ও IgG অ্যান্টিবডির উপস্থিতি দেখায়। IgM সাধারণত সংক্রমণের প্রথম দিকে পাওয়া যায়।

  • প্লাটিলেট কাউন্ট: ডেঙ্গুর কারণে প্লাটিলেট কমে যেতে পারে, তাই এটি পরীক্ষা করা হয়।

  • রক্তের অন্যান্য উপাদানের স্তর, যেমন হিমোগ্লোবিন, হেমাটোক্রিট ইত্যাদি পরীক্ষা করা হতে পারে।

  • গর্ভস্থ শিশু, পানির অবস্থা ইত্যাদি জানতে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে হয়।

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু শনাক্ত হলে প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার কথা বলা হয়। কারণ, এটি উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন ডেঙ্গুর একটি। না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন, নিয়মিত মনিটরি করবেন ও চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলবেন।

  • ডা. শারমিন আব্বাসি, স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow