ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নির্ঘুম শ্রমিকরা, কয়েক কিমি যানজট
গাজীপুরে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু করে টানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। তাদের দাবি না মিটলে সড়ক অবরোধ না তোলার হুমকি দিয়েছে শ্রমিকরা, যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও তারা কোনো ধরনের কথা শুনতে রাজি নয়। এ ঘটনায় মহাসড়কে লাখো মানুষের চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।
গাজীপুরে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু করে টানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। তাদের দাবি না মিটলে সড়ক অবরোধ না তোলার হুমকি দিয়েছে শ্রমিকরা, যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও তারা কোনো ধরনের কথা শুনতে রাজি নয়। এ ঘটনায় মহাসড়কে লাখো মানুষের চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।
এদিকে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত চলতে থাকে। এতে, মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং হাজারো মানুষ আটকা পড়ে। অনেক গাড়ি ১৫-২০ ঘণ্টা ধরে যানজটে আটকা পড়েছে।
শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তারা মালেকের বাড়ি এলাকায় টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার বকেয়া বেতনের দাবিতে এই অবরোধ শুরু করেন। তাদের দাবির সপক্ষে তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাস্তায় বসে থাকে, এবং মহাসড়কের উভয় পাশে গাড়ির দীর্ঘ সারি তৈরি হয়।
রাজশাহী থেকে আসা ট্রাক চালক ইকবাল হোসেন বলেন, "শনিবার সকাল ১০টা থেকে ভোগড়া বাইপাস মোড়ে আটকা পড়েছি। রবিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার যেতে পেরেছি। রাস্তা সরু হওয়ায় বিকল্প পথও নেই।"
প্রাইভেটকার চালক সাফায়েত হোসেন বলেন, "জরুরি কাজে অফিসের স্যারকে নিয়ে শনিবার দুপুর থেকে বাসন সড়কে আটকা পড়েছি। খাওয়া-দাওয়া, গোসল কিছুই করতে পারছি না। গাড়ি রেখে কোথাও যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না, সারারাত আতঙ্কে কাটিয়েছি।"
নওগাঁ থেকে আসা যাত্রী শরিফ আহমেদ জানান, "বাস থেকে নামার পর এক কিলোমিটার পথ হেঁটে ঢাকায় যেতে পারলাম, কিন্তু আরও এক কিলোমিটার হেঁটে কিছু একটা মিলবে এমন আশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।"
শ্রমিক রেহেনা আক্তার বলেন, "আমরা আর থাকতে পারছি না। আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। বাসা ভাড়া, দোকানের বাকি পরিশোধ করতে পারছি না, খাবার নেই। সন্তানকে বাবার কাছে রেখে এখানে বেতন দাবি করতে বাধ্য হয়েছি।"
অপর শ্রমিক সালমা আক্তার বলেন, "আমরা মানুষের কষ্ট বুঝতে পারছি, কিন্তু আমাদের কষ্টের কথাও কেউ শুনছে না। শুধু বকেয়া বেতন পেলে আমরা অবরোধ তুলে নেব।"
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, "শ্রমিকদের অবরোধের কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বিকল্প পথের মাধ্যমে যান চলাচল করানোর চেষ্টা করছি, এবং মালিক ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি সমাধান করার চেষ্টা করছি।"
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) নাজির আহমেদ বলেন, "শ্রমিকদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে, তবে শ্রমিকরা কোনো আশ্বাস মানছেন না। ফলে যানজট কমানো সম্ভব হচ্ছে না।"
What's Your Reaction?