নাম লোগো পোশাক পরিবর্তন, নতুন আইনে পরিচ্ছন্ন বাহিনী হবে র্যাব
দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ অধ্যাদেশের অধীনে পরিচালিত এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এখন নিজেকে নতুনভাবে পরিচিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে। বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাকের পরিবর্তনসহ আরও কিছু সংস্কারের কাজ চলছে, আর সেই সঙ্গে বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন একটি আইন প্রণয়ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। র্যাবের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে, মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, র্যাবের কোনো যৌক্তিকতা নেই এবং এটি বিলুপ্ত করা উচিত। আবার কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, আইনি কাঠামোর মধ্যে সংস্কার করে র্যাবকে পরিচালনা করা যেতে পারে।
দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ অধ্যাদেশের অধীনে পরিচালিত এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এখন নিজেকে নতুনভাবে পরিচিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে। বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাকের পরিবর্তনসহ আরও কিছু সংস্কারের কাজ চলছে, আর সেই সঙ্গে বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন একটি আইন প্রণয়ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। র্যাবের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে, মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, র্যাবের কোনো যৌক্তিকতা নেই এবং এটি বিলুপ্ত করা উচিত। আবার কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, আইনি কাঠামোর মধ্যে সংস্কার করে র্যাবকে পরিচালনা করা যেতে পারে।
২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে র্যাব গঠন করা হয়েছিল সন্ত্রাসবাদ ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনের উদ্দেশ্যে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ১৫ বছরের মধ্যে বাহিনীর কর্মকাণ্ডে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ ওঠেছে। ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
নারায়ণগঞ্জের সাত খুন এবং কক্সবাজারের কথিত বন্দুকযুদ্ধসহ নানা বিতর্কিত ঘটনায় র্যাবের কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও বিশেষজ্ঞরা এই বাহিনীর সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন, যা সাম্প্রতিককালে আরও তীব্র হয়েছে। বিশেষত, গুম সংক্রান্ত একটি কমিশন গঠনের পর, ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে র্যাবের বিরুদ্ধে গুমের ১৭২টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, র্যাবের সংস্কারের প্রয়োজন নেই, এটি ছিল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য গঠিত বাহিনী এবং এটি বিলুপ্ত করে দেওয়া উচিত। মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটনও একই মত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে গুমের ১৭২টি অভিযোগ পাওয়ার পর, এটি বিলুপ্ত করা উচিত।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৪৬৭টি কথিত বন্দুকযুদ্ধে র্যাব সরাসরি জড়িত ছিল। মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন মনে করেন, র্যাবকে বিলুপ্ত করা উচিত, কারণ সংস্কার করে কোনো কাজ হবে না যদি পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট ঠিক না থাকে।
তবে সমাজবিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক মনে করেন, র্যাবের কাজকর্ম যদি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা যায়, তাহলে এটি অনেক দিক থেকেই সহায়ক হতে পারে। তবে, গুম বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
র্যাবের লিগাল মিডিয়া উইংয়ের কমান্ডার লে. কর্নেল মুনিম ফেরদৌস জানান, বাহিনীর নাম, পোশাক এবং নিয়ম-কানুনের পরিবর্তন ও সংস্কারের কাজ চলছে। র্যাব এখন পর্যন্ত পুলিশ অধ্যাদেশের অধীনে পরিচালিত হলেও, নতুন আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হচ্ছে, যাতে বাহিনীর প্রশাসনিক কার্যক্রম, নিয়োগ, পদায়ন এবং শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন বিধান অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
What's Your Reaction?