পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশ অমান্য করে নতুন ইটভাটা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনার পরও মির্জাপুরের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি পরিবেশ অধিদপ্তর। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এসব ভাটা বন্ধে এখনো কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।
মির্জাপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কার্যক্রমে নেই অগ্রগতি, এলাকাবাসীর উদ্বেগ
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনার পরও মির্জাপুরের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি পরিবেশ অধিদপ্তর। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এসব ভাটা বন্ধে এখনো কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।
অবৈধ ইটভাটাগুলোর অবস্থান
মির্জাপুরে বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটা সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- বহুরিয়া ইউনিয়ন: বহুরিয়া গ্রামে আরবিসি ব্রিকস, এমএসবি ব্রিকস, বাটা ব্রিকস; চান্দুলিয়া গ্রামে এইচইউবি ব্রিকস।
- গোড়াই ইউনিয়ন: দেওহাটা মল্লিকপাড়া গ্রামে সনি ব্রিকস; পাথালিয়াপাড়া গ্রামে বিএন্ডবি ব্রিকস এবং দেওহাটা ও বাইমহাটী গ্রামে রান ব্রিকস।
প্রত্যেকটি ইটভাটায় ২০ থেকে ২৫ একর আবাদি জমি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ভাটার বেশিরভাগেরই বৈধ কাগজপত্র নেই এবং অনেকের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই।
নির্দেশনার পরও পদক্ষেপ নেই
গত ৬ নভেম্বর কুমুদিনী হাসপাতালের একটি প্রকল্প পরিদর্শনের সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, নতুন করে ইটভাটা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে দ্রুত অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন।
আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ
ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী:
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চল বা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার তিন কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ।
- কৃষি জমিতে ইটভাটা তৈরিতে রয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ।
তবে এসব আইন অমান্য করে মির্জাপুরের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। পরিবেশ ছাড়পত্র বা জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়াই নতুন সাতটি ইটভাটা চালু হয়েছে।
পরিসংখ্যান ও স্থানীয়দের অভিযোগ
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, মির্জাপুরে মোট ১০৫টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এগুলো বন উজাড় ও পরিবেশ ধ্বংস করছে। এ বছর নতুন করে সাতটি অবৈধ ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এলাকাবাসী এসব ভাটা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, "অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।"
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.বি.এম আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, "অবৈধভাবে নতুন ইটভাটা স্থাপনের সুযোগ নেই। উপজেলা প্রশাসন দ্রুত এসব ভাটা চিহ্নিত করে অভিযান পরিচালনা করবে।"
এলাকাবাসী প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছে, যাতে অবৈধ ইটভাটার কারণে সৃষ্ট পরিবেশের ক্ষতি রোধ করা যায়।
What's Your Reaction?