আমদানির ২১ টাকা কেজি আলু খুচরায় ৭৫ টাকা

বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও আলুর দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না। পুরনো আলু শেষ হলেও নতুন আলু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে খুচরা বাজারে আলুর দাম দ্রুত বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার আলু আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করেছে। এরপরও আমদানি করা আলু ভোক্তাদের জন্য সস্তা হচ্ছে না।

Nov 23, 2024 - 04:44
 0  5
আমদানির ২১ টাকা কেজি আলু খুচরায় ৭৫ টাকা

বাজারে আলুর সংকট নেই, তবে সিন্ডিকেটের কারণে দামে আগুন

বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও আলুর দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না। পুরনো আলু শেষ হলেও নতুন আলু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে খুচরা বাজারে আলুর দাম দ্রুত বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার আলু আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করেছে। এরপরও আমদানি করা আলু ভোক্তাদের জন্য সস্তা হচ্ছে না।

সিন্ডিকেটের কারসাজি

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভারত থেকে আমদানি করা আলুর প্রতি কেজি খরচ পড়ে ২১ টাকা ৩০-৬০ পয়সা। পরিবহন ও অন্যান্য খরচসহ এই আলু ৩০-৩৫ টাকায় ভোক্তাপর্যায়ে পৌঁছানোর কথা। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারসাজিতে এই আলু খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।

কিভাবে সিন্ডিকেট কাজ করছে:

  • আমদানিকারকরা আলু আড়তদারদের কাছে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি করছেন।
  • আড়তদাররা এই দামে আলু বিক্রি করছেন পাইকারি পর্যায়ে।
  • খুচরা বাজারে এই আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।

হিমাগারের আলুর দামও চড়া

পুরোনো আলু হিমাগার থেকে ৩৫-৪০ টাকায় বেরিয়ে পাইকারি বাজারে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে এটি পৌঁছে যাচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়, যা এক মাস আগেও ৫৫-৬০ টাকা ছিল।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, কিছু ব্যবসায়ী হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর দাম বাড়িয়ে বাজারে বিক্রি করছেন। এর ফলে বাজারে আলুর দাম স্থিতিশীল থাকছে না।

ভোক্তার ক্ষোভ

নয়াবাজারে আলু কিনতে আসা আমেনা বেগম বলেন, “এক কেজি আলু কিনতে এখন ৭৫ টাকা লাগছে। আগে শীত আসার সময় আলুর দাম ২৫ টাকার নিচে নেমে আসত। এবার তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। বাজারে আলুর কোনো সংকট নেই, তবু বিক্রেতারা বাড়তি দাম নিচ্ছেন।”

সিন্ডিকেট ভাঙার দাবি

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, “সরকারের কাছে সিন্ডিকেট সম্পর্কে সব তথ্য আছে। কার্যকর ব্যবস্থা নিলে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কিন্তু এ ক্ষেত্রে গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। ভোক্তাদের ওপর গলাকাটা দাম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

সরকারি উদ্যোগ

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল জানিয়েছেন, সিন্ডিকেটের কারসাজি ধরা পড়ছে। অভিযানে দেখা গেছে, আমদানিকারকরা ২১ টাকার আলু ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। এর প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

অন্যান্য পণ্যের দামেও চড়া মূল্য

বাজারে আলুর পাশাপাশি অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বেশ চড়া।

  • পেঁয়াজ: দেশি পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০-১০৫ টাকা।
  • সবজি: ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা, মুলা ৫০-৬০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা।
  • সিম: ১০০-১২০ টাকা (যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ২৩০-২৪০ টাকা)।
  • ব্রয়লার মুরগি: ১৯০ টাকা প্রতি কেজি।
  • ডিম: প্রতি ডজন ১৪৫-১৫০ টাকা।

ভোক্তাদের প্রত্যাশা

ভোক্তারা সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে সিন্ডিকেট ভেঙে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় করার দাবি জানিয়েছেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow