২৫ বছর পর জাহানারা পরিবারের কাছে ফিরলেন যেভাবে
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া বাজারে কয়েক সপ্তাহ ধরে এক নারী ঘোরাঘুরি করছিলেন। তাঁর অস্থির অবস্থায় বাজার কমিটির সভাপতি আশরাফুল আলম তাঁকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন। পরিচয় জানতে চাইলে ওই নারী জানান, তাঁর নাম জাহানারা বেগম। তবে তিনি ঠিকমতো নিজের পরিবারের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। শুধু অস্পষ্টভাবে "বরগুনা" এবং "ঘটবাড়িয়া" শব্দগুলো উল্লেখ করেন।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া বাজারে কয়েক সপ্তাহ ধরে এক নারী ঘোরাঘুরি করছিলেন। তাঁর অস্থির অবস্থায় বাজার কমিটির সভাপতি আশরাফুল আলম তাঁকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন। পরিচয় জানতে চাইলে ওই নারী জানান, তাঁর নাম জাহানারা বেগম। তবে তিনি ঠিকমতো নিজের পরিবারের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। শুধু অস্পষ্টভাবে "বরগুনা" এবং "ঘটবাড়িয়া" শব্দগুলো উল্লেখ করেন।
এই তথ্য ও জাহানারার ছবি দিয়ে আশরাফুল আলম নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। সেই পোস্ট দেখে বরগুনা থেকে তাঁর পরিবার যোগাযোগ করে। শুক্রবার দুপুরে তাঁর ছোট মেয়ে হাসি আক্তার ও ভগ্নিপতি মোস্তফা মির্জা পাকুন্দিয়া এসে জাহানারাকে চিনে নিয়ে যান।
জাহানারা বেগম বরগুনা সদর উপজেলার ঘটবাড়িয়া গ্রামের আবদুল লতিফের স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তানের জননী। ১৯৯৯ সালে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নিখোঁজ হন তিনি। পরিবারের লোকজন জানান, সেদিন জাহানারা তাঁর তিন বছরের ছোট ছেলে সাইদুলসহ ঢাকায় আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন। সদরঘাটে লঞ্চ থেকে নেমে শৌচাগারে যাওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর বহু খোঁজাখুঁজির পরও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
তাঁর ভগ্নিপতি মোস্তফা মির্জা বলেন, ২৫ বছরে অযত্ন-অবহেলার কারণে জাহানারার চেহারায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। তবে পুরনো স্মৃতিচারণে কিছু তথ্য মিলে গেলে তাঁরা নিশ্চিত হন যে তিনিই জাহানারা। মেয়ে হাসি আক্তার, যিনি মাকে হারানোর সময় মাত্র পাঁচ বছরের ছিলেন, এত বছর পরও মাকে চিনতে পেরেছেন।
মাকে কাছে পেয়ে আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাসি আক্তার। তিনি বলেন, "আমার বয়স যখন পাঁচ, তখন মাকে হারিয়েছি। মায়ের আদর কখনো পাইনি। মাকে খুঁজতে খুঁজতে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আজ ৩০ বছর বয়সে আবার মাকে কাছে পেয়েছি। মনে হচ্ছে, গোটা পৃথিবী ফিরে পেয়েছি।"
বাজার কমিটির সভাপতি আশরাফুল আলম জানান, জাহানারাকে দু-তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে দেখার পর তিনি নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তাঁর অস্পষ্ট কথাগুলো শুনে ছবি ও তথ্য ফেসবুকে পোস্ট করলে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়।
জাহানারাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এই ঘটনায় এলাকায় আনন্দ ও কৃতজ্ঞতার সুর বয়ে যায়।
What's Your Reaction?