প্রজ্ঞাপনে থেকে গেছে ‘অনিবাসী’ শব্দ, বিনিয়োগ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

চার বছর পর নাবিক, পাইলট ও কেবিন ক্রুদের জন্য ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ পুনঃস্থাপন করেছে সরকার। এছাড়া, বন্ডে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমাও তুলে দেওয়া হয়েছে। ৪ নভেম্বর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এ সুযোগ পুনঃপ্রবর্তন করেছে, যা ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। তবে, প্রজ্ঞাপনে ‘অনিবাসী’ শব্দটি রাখা হয়েছে, যা নিয়ে নাবিকদের মধ্যে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

Nov 13, 2024 - 10:27
 0  3
প্রজ্ঞাপনে থেকে গেছে ‘অনিবাসী’ শব্দ, বিনিয়োগ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

চার বছর পর নাবিক, পাইলট ও কেবিন ক্রুদের জন্য ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ পুনঃস্থাপন করেছে সরকার। এছাড়া, বন্ডে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমাও তুলে দেওয়া হয়েছে। ৪ নভেম্বর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এ সুযোগ পুনঃপ্রবর্তন করেছে, যা ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। তবে, প্রজ্ঞাপনে ‘অনিবাসী’ শব্দটি রাখা হয়েছে, যা নিয়ে নাবিকদের মধ্যে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

১৯৮১ সালে পাঁচ বছরের মেয়াদে ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ড চালু হয়, যা সরল সুদে মুনাফা প্রদান করত। ২০১৫ সালে বন্ড বিধির সংশোধন করা হয় এবং এর মাধ্যমে বিনিয়োগের কোনো পরিমাণ সীমা রাখা হয়নি। তবে, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর প্রভাবে ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায় এবং বিনিয়োগ সীমা ১ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রায় নির্ধারণ করা হয়। পরে, ২০২২ সালে ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের ঊর্ধ্বসীমা তুলে নেওয়া হলেও ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডের সীমা বহাল ছিল।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সহসভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন কাদ্রী জানান, "বিনিয়োগের সুযোগ পুনঃস্থাপন করা হলেও 'অনিবাসী' শব্দটি থাকার কারণে নাবিকদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। আমরা এ বিষয়ে আইআরডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং এই শব্দটি বাদ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম, তবে মনে হচ্ছে ভুলক্রমে এটি থেকে গেছে।"

বিএমএমওএ দাবি করেছে যে, নাবিকদের জন্য ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছিল যা অযৌক্তিক। তাদের মতে, নাবিকরা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজে কাজ করেন এবং তাদের অবস্থান কোন নির্দিষ্ট দেশে থাকার প্রমাণ দেওয়া সম্ভব নয়। তদুপরি, জাহাজে যোগ দেওয়ার শুরু থেকে নামা পর্যন্ত সব তথ্য আন্তর্জাতিকভাবে বৈধ এবং স্বীকৃত।

নাবিকদের জন্য বিনিয়োগের এই সুযোগ পুনঃস্থাপনের দাবি পেয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ও আইআরডি সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছে, যাতে ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা তুলে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।

বিএমএমওএ আরও দাবি করেছে, ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগ করতে কোনো ফরেন কারেন্সি হিসাব থাকা বাধ্যতামূলক নয় এবং এটি বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে কেনা যাবে। এই বন্ডে মুনাফা আয়করমুক্ত এবং ঋণ নেওয়ার সুযোগও রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা নিজের নামে বা মনোনীত ব্যক্তির নামে বন্ড কিনতে পারেন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারাও এ বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

আইআরডি সচিব মো. আবদুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেছেন, "প্রজ্ঞাপনে পেশাজীবীদের নাম উল্লেখ করে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং বিনিয়োগে কোনো ঝামেলা হওয়ার কথা নয়। যদি কোনো সমস্যা তৈরি হয়, তাহলে সংশোধন বা স্পষ্টীকরণ করা হবে।"

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow