বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ছাঁটাইয়ের উদ্বেগ বৃদ্ধি
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ছাঁটাইয়ের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যেসব ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তিত হয়েছে, সেসব ব্যাংকে এই উদ্বেগ বেশি দেখা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ছাঁটাইয়ের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যেসব ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তিত হয়েছে, সেসব ব্যাংকে এই উদ্বেগ বেশি দেখা যাচ্ছে।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল) সম্প্রতি বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকার সময় নিয়োগপ্রাপ্ত ৫৭৯ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছে। অন্যদিকে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)ও ১০০ এর বেশি কর্মকর্তাকে বাদ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জানা গেছে, অনেক কর্মকর্তার নাম তালিকায় যুক্ত হয়েছে শুধুমাত্র চট্টগ্রামে বসবাস করার কারণে। ইউসিবির প্রায় ৪০ কর্মকর্তা ইতিমধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন।
এছাড়া ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংকসহ আরও কিছু ব্যাংক কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের জানুয়ারিতে একটি প্রজ্ঞাপনে নির্দেশনা দিয়েছিল যে, লক্ষ্য অর্জন না করার অজুহাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত লক্ষ্য না পূরণ কিংবা অদক্ষতার কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া তাঁদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা প্রথম আলোকে বলেন, "কর্মকর্তাদের ইচ্ছেমতো চাকরিচ্যুত করা যাবে না, তবে কোনো নির্দিষ্ট নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।"
সম্প্রতি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ সভায় ৫৭৯ কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাঁদেরকে গত বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়ে চাকরিচ্যুতির বিষয়ে অবহিত করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব কর্মকর্তাকে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়নি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া আইনসম্মত ছিল না।
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংকটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) শীর্ষ পর্যায়ের ৪০ কর্মকর্তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই বিভিন্ন শাখার ব্যবস্থাপক। ব্যাংকটি ১০০ কর্মকর্তাকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যা কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
এ ব্যাপারে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান শরীফ জহির ও এমডি মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তাদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
What's Your Reaction?