যেসব লক্ষণ দেখলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা সারা জীবন ধরে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে থাকে এবং এটি সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যখন শরীর রক্তের চিনিকে (গ্লুকোজ) ভাঙতে ব্যর্থ হয়, তখন ডায়াবেটিস ঘটে। এই রোগের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি বিকল হওয়া, চোখের সমস্যা এবং অনেক সময় শরীরের নিচের অংশ কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ কোটিরও বেশি, যা গত ৩০ বছরের তুলনায় চারগুণ বেড়েছে।
ডায়াবেটিস: জীবনব্যাপী সমস্যা এবং এর প্রাথমিক লক্ষণ
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা সারা জীবন ধরে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে থাকে এবং এটি সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যখন শরীর রক্তের চিনিকে (গ্লুকোজ) ভাঙতে ব্যর্থ হয়, তখন ডায়াবেটিস ঘটে। এই রোগের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি বিকল হওয়া, চোখের সমস্যা এবং অনেক সময় শরীরের নিচের অংশ কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ কোটিরও বেশি, যা গত ৩০ বছরের তুলনায় চারগুণ বেড়েছে।
যদিও ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি হলে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে তা চিহ্নিত করা হলে, এই রোগের নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হয়ে যায়। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিসের কিছু সাধারণ লক্ষণ:
ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলো:
- ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া এবং অতিরিক্ত পিপাসা লাগা
- দুর্বল অনুভব করা এবং ঘোরাঘোর ভাব আসা
- ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
- রক্তের শর্করা কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়া
- মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া
- কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া
- শরীরে কোনো ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলে তা দীর্ঘদিনেও না সারানো
- ত্বক শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি হওয়া
- মেজাজ খিটখিটে ও বিরক্ত হওয়া
- চোখে কম দেখা শুরু হওয়া
বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের বাড়মান প্রবণতা
বাংলাদেশের ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ. কে. আজাদ খান বলেন, "ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের অন্তত ৫০ শতাংশ জানেন না যে তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাই, এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি।"
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ এবং ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ।
ডায়াবেটিসের কারণ এবং নিয়ন্ত্রণ
বাংলাদেশের ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলেন, "যারা প্রথমে এই রোগে আক্রান্ত হন, তারা বুঝতে পারেন না কারণ এটি ধীরগতির রোগ। তবে, যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, তবে কিডনি, লিভার, চোখ এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।"
তিনি বলেন, "যারা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করেন, যেমন প্রতিদিন ১০ হাজার পদক্ষেপ হাঁটেন, তারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হন।"
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা শারীরিক পরিশ্রম করেন না, অলস জীবনযাপন করেন বা যাদের পরিবারে ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি বেশি। এছাড়া, গর্ভবতী নারীদের মধ্যে ডায়াবেটিস হতে পারে এবং যারা হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল সমস্যা সহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
কি করতে হবে?
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলেন, যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন, তাদের বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে। বর্তমানে ফার্মেসি বা ক্লিনিকগুলোতে কম খরচে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায়। ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে, একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
ডায়াবেটিস যত তাড়াতাড়ি শনাক্ত হবে, রোগী তার চিকিৎসা দ্রুত শুরু করতে পারবেন এবং তার জীবনযাপনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা
What's Your Reaction?