জাপার কার্যালয়ে হামলা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার আহ্বান

জাতীয় পার্টির আহূত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি হামলা, কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত নয়, বরং বিপজ্জনক বলেও মনে হচ্ছে।

Nov 3, 2024 - 04:49
 0  11
জাপার কার্যালয়ে হামলা  গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার আহ্বান

জাতীয় পার্টির আহূত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি হামলা, কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত নয়, বরং বিপজ্জনক বলেও মনে হচ্ছে। আমরা আশা করেছিলাম, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে সহিংসতা ও জবরদস্তির সংস্কৃতি শেষ হবে এবং সব রাজনৈতিক দল নির্বিঘ্নে তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারবে।

কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পুনরাবির্ভাব অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় দুই পক্ষের বক্তব্য ভিন্ন। জাতীয় পার্টির দাবি, শুক্রবারের কর্মসূচি সফল করার জন্য দলের নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় একদল লোক সেখানে হামলা ও ভাঙচুর করে। অন্যদিকে, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’ দাবি করে যে তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে হামলা চালানো হয়।

জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে শনিবার আহূত সমাবেশকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’ ওই সমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণা দেয়।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন যে তাঁরা ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিলেন না, বরং স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। তিনি শনিবার ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দেন। এদিকে, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা একই স্থানে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় সভা, মিছিল ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করার পর উভয় পক্ষই তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে। এতে রাজনৈতিক সহনশীলতার পরিচয় ফুটে ওঠে। গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে, যা পরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে রূপ নেয়। ওই সময় ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’ নামে কোনো সংগঠনের কার্যক্রম দেখা যায়নি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল প্রথম আলোকে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। তবে এই ঘটনা আন্দোলনের ফোরামের সিদ্ধান্ত ছিল না এবং জাতীয় পার্টির কর্মসূচি নিয়ে তাদের কোনো কর্মসূচির পরিকল্পনা নেই।

জাতীয় পার্টির কার্যালয়মুখী কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জাতীয় পার্টির কর্মসূচি নিয়ে ‘আমাদের কর্মসূচি নেই’ বলছেন, সেখানে অন্য সংগঠনের কর্মসূচির যৌক্তিকতা নিয়ে সন্দেহ জন্মেছে।

প্রতিপক্ষের কর্মসূচি প্রতিহত করার ঘোষণা আইনশৃঙ্খলা এবং জননিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক। রংপুরে দুই ছাত্রনেতার কর্মসূচির বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টির অবাঞ্ছিত ঘোষণারও নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক সমাজে সবাইকে তাঁদের অবস্থান থেকে কর্মসূচি পালন করতে হবে, এবং প্রতিপক্ষের কর্মসূচিকে বাধা দেওয়া বা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার অগণতান্ত্রিক মানসিকতা পরিহার করতে হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow