দামেস্কে বিদ্রোহী নেতার সঙ্গে মার্কিন উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের বৈঠক
এক সময়ের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত সিরিয়ার বিদ্রোহী দল হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর প্রধান আহমেদ আল-শারার সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদল বৈঠক করেছে।
এক সময়ের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত সিরিয়ার বিদ্রোহী দল হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর প্রধান আহমেদ আল-শারার সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদল বৈঠক করেছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের পতনের পর, দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা তীব্র হয়ে উঠেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। উল্লেখযোগ্য যে, এইচটিএস এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী সংগঠন তালিকায় রয়েছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) মডার্ন ডিপ্লোমেসি এক প্রতিবেদনে জানায়, বাশার আল-আসাদের শাসনের পতনের পর দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি শারার নেতৃত্বে এই সফলতা অর্জন করেছে। বিদ্রোহী জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর প্রধান, যা পূর্বে আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত ছিলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মার্কিন কূটনীতিকরা সিরিয়ার জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে আলোচনা করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার জনগণের সহায়তায় কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়ে কাজ করবে।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক শীর্ষ কূটনীতিক বারবারা লিফ, প্রেসিডেন্টের বন্দি বিষয়ক দূত রজার কারস্টেন্স এবং সিরিয়া বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা ড্যানিয়েল রুবিনস্টেইন। এটি আসাদ সরকারের পতনের পর প্রথম মার্কিন প্রতিনিধিদলের দামেস্ক সফর।
সিরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আল-ওয়াতান অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী তালিকা থেকে এইচটিএসের সম্ভাব্য অপসারণের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
এইচটিএস একসময় সিরিয়ার আল-কায়েদা শাখার সঙ্গে যুক্ত ছিল, তবে বর্তমানে গোষ্ঠীটি তাদের নীতি পরিবর্তন করেছে এবং একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। গোষ্ঠীটির নেতৃত্ব জানিয়েছে, তারা এখন সকলের সাথে সহযোগিতা করার একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে চায়।
সম্প্রতি বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে, আফগানিস্তানের আদলে সিরিয়াকে গড়ে তোলার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন এইচটিএস নেতা আহমেদ আল-শারা। তিনি বলেন, "আফগানিস্তান একটি গোষ্ঠীভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, যেখানে ভিন্ন রীতিনীতি রয়েছে। সিরিয়ায় মানুষের চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণ আলাদা।"
নারী শিক্ষা সম্পর্কে তিনি বলেন, "ইদলিবে প্রায় আট বছর ধরে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় চলছে, এবং সেখানে পড়ুয়া নারীর সংখ্যা ৬০ শতাংশের বেশি।"
এছাড়া, সিরিয়ায় মদ্যপান অনুমোদন করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, "এ ধরনের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করার অধিকার আমার নেই, কারণ এটি আইনি বিষয়।"
আহমেদ আল-শারা আরও জানিয়েছেন, তার দেশ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধে ক্লান্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে সিরিয়া তার প্রতিবেশী বা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য কোনো হুমকি নয়।
What's Your Reaction?