খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালতকে আরও সক্রিয় করা হবে
খেলাপি ঋণ আদায়ে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অর্থঋণ আদালতকে আরও সক্রিয় করা হবে এবং হাইকোর্টে থাকা রিট মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হবে না।
খেলাপি ঋণ আদায়ে শক্ত পদক্ষেপ, অর্থঋণ আদালত সক্রিয় করা হবে
খেলাপি ঋণ আদায়ে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অর্থঋণ আদালতকে আরও সক্রিয় করা হবে এবং হাইকোর্টে থাকা রিট মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হবে না।
সরকারের ১০০ দিনের অগ্রগতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার সচিবালয়ে সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।
তিনি জানান, হাইকোর্টে খেলাপি ঋণসংক্রান্ত রিট মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দুটি বেঞ্চ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী তিন মাস এ বেঞ্চগুলো শুধু রিট মামলা পরিচালনা করবে।
খেলাপি ঋণের বর্তমান চিত্র
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
অর্থঋণ আদালতে ৬০টি ব্যাংকের মোট ২ লাখ ৭ হাজার ৫৯৩টি মামলা রয়েছে, যার বিপরীতে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা আটকে আছে।
ব্যবসায়ীদের জন্য বার্তা
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যেসব ব্যবসায়ী নিয়ম মেনে ঋণ পরিশোধ করেন এবং কর প্রদান করেন, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে যারা বিগত সরকারের আমলে অনিয়ম করেছেন, তাদের জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্যাংক খাতের সংকট নিরসনে পরিকল্পনা
সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আর্থিক খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আগের অনিয়ম নিয়ে তিনি বলেন, “গভর্নর এবং ডেপুটি গভর্নররা পছন্দমতো নিরীক্ষা করতেন। এটি বন্ধ করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “ইসলামী ব্যাংক পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে। কিছু ব্যাংক দুর্বল হলেও বন্ধ হবে না। আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
বীমা ও পুঁজিবাজারের অবস্থা
বীমা খাতের সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কিছু বীমা কোম্পানির আয় মূলত পলিসি বাতিলের মাধ্যমে হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে আইডিআরএ এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানো হবে।”
পুঁজিবাজারের অনিয়মের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কারখানা নেই, কিন্তু শেয়ার বিক্রি হচ্ছে—এ ধরনের চিত্র পরিবর্তনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
মূল্যস্ফীতি ও জনগণের কষ্ট
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “এটি আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পেঁয়াজ, চাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো আলু ও পেঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিক রকম বেশি।”
তিনি আরও বলেন, “মানুষকে ধৈর্য ধরতে বলি। তবে বাজারের পরিস্থিতি আমিও বুঝি। এক হাজার টাকা নিয়ে বাজারে গেলে হাতে গোনা জিনিস কেনা যায়। কারণ, আমিও বাজারে যাই।”
উন্নয়ন প্রকল্পের পুনর্মূল্যায়ন
সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, রাজনৈতিক বিবেচনায় নেয়া অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো বাতিলের চিন্তা করা হচ্ছে। যেসব প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি নেই, সেগুলো বাতিলের পাশাপাশি কৃচ্ছ্রসাধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সরকারের লক্ষ্য, ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, দুর্বল ব্যাংকগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন l
What's Your Reaction?