ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে কৃত্রিম বা বায়োনিক কানের ধারণা এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা সম্পূর্ণ বধির মানুষের শ্রবণশক্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে অত্যন্ত কার্যকরী। বিশেষ করে জন্মগত বধিরতা বা পরবর্তীতে বধির হওয়া রোগীদের জন্য এটি একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি।
জন্মগত বধিরতায় শিশুরা জন্ম থেকেই কানে শুনতে পায় না, ফলে তারা কথা বলাও শেখে না এবং মূক হয়ে পড়ে। তবে ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট ছোট বয়সে কথা বলা শেখার আগে ব্যবহার করা হলে, তারা কথা বলতে পারে এবং শব্দপ্রতিবন্ধী জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।
ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের অংশ
অভ্যন্তরীণ অংশ: এটি শব্দকে বৈদ্যুতিন ইম্পালসে রূপান্তর করে অডিটরি নার্ভে পাঠায়, যা ককলিয়ার কার্যকারিতা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। এটি একটি চমকপ্রদ নিউরাল প্রস্থেসিস, যা শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করে।
বাহ্যিক অংশ: এটি কানের পেছনে লাগানো থাকে এবং মাইক্রোফোনের মাধ্যমে শব্দ সংগ্রহ করে। এরপর শব্দটি একটি ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যালে রূপান্তরিত হয়, যা রিসিভার ডিকোড করে বৈদ্যুতিন সিগন্যাল হিসেবে ককলিয়ার নার্ভে পাঠায়। এই প্রক্রিয়া থেকে মস্তিষ্কে শব্দের অনুভূতি সৃষ্টি হয়।
ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের জন্য অস্ত্রোপচার প্রয়োজন, তবে সাধারণত এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। তবে, অস্ত্রোপচারের সুফল প্রত্যেক রোগীর জন্য আলাদা হতে পারে।
সুবিধা
- ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের সফলতার হার বেশ উচ্চ।
- সঠিক সময়ে অস্ত্রোপচার করা হলে শ্রবণশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
- অস্ত্রোপচারের পর সাধারণত কোনো বড় কাটাছেঁড়া করতে হয় না এবং দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়।
অসুবিধা
- সঠিক সময়ে অস্ত্রোপচার না করলে সফলতার হার কমে যেতে পারে।
- অস্ত্রোপচারটি বেশ ব্যয়সাপেক্ষ।
- এর জন্য অনেক অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটে নিয়মিতভাবে সম্পাদিত হচ্ছে।
অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা