কারওয়ান বাজারে টিসিবির ট্রাকের সামনে দীর্ঘ সারি, অনিয়মের অভিযোগ

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শনিবার টিসিবির ট্রাকের সামনে ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। অনেকেই এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছেন, এবং সারিতে দাঁড়ানো মানুষের মধ্যে বেশ কিছু হট্টগোল শোনা যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরেই ট্রাকের পাশে দুই ব্যক্তির মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি শুরু হয়, যার ফলে কিছু সময়ের জন্য পণ্য বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।

ক্রেতাদের অভিযোগ, কিছু মানুষ সিরিয়াল ভেঙে পণ্য কিনছেন, এমনকি এক ব্যক্তি একাধিকবার পণ্য কিনছেন। এতে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করা মানুষদের পণ্য না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। টিসিবির প্রতিটি ট্রাকে ৩৫০ জনের জন্য পণ্য বরাদ্দ থাকলেও অনিয়মের কারণে যাঁরা আগে থেকে সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা অনেকেই পণ্য পাবেন না, যার ফলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।

এছাড়া, কারওয়ান বাজারে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা আলাদা সারি করা হলেও, নারীদের সারিতে বেশ কিছু শিশুদের উপস্থিতি দেখা যায়। হট্টগোলের কারণে নারী ও শিশুদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

তেজকুনিপাড়া থেকে আসা গৃহবধূ রেহানা বেগম বলেন, "ঘরের কাজকর্ম ফেলে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা সমস্যা।" তিনি মনে করেন, ট্রাক থেকে পণ্য দেওয়া সংখ্যা বাড়ানো হলে সমস্যা কমতে পারে। এছাড়া, আলু ও পেঁয়াজসহ আরও কিছু পণ্য দেওয়া হলে ভালো হতো বলে তাঁর মত।

আজ সকালে, রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবির ট্রাক থেকে তিনটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে—প্রত্যেক ক্রেতাকে দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল এবং পাঁচ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে। প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ৬০ টাকা এবং প্রতি কেজি চালের দাম ৩০ টাকা।

এছাড়া, রাজধানীসহ দেশের ৫০টি স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলছে, যার মধ্যে রামপুরা টিভি সেন্টার, পলাশ নগর জামে মসজিদ, কলেজ গেট, শাহজাদপুর, আফতাবনগরসহ আরও অনেক স্থান রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরেও ২০টি স্থানে এই কার্যক্রম চলছে।

দেশে গত দেড় বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে, যা অক্টোবর মাসে ১০.৮৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বেড়ে ১২.৬৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, নিম্ন আয়ের মানুষকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে টিসিবি ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে তেল, ডাল এবং চাল বিক্রি করছে।

এছাড়া, দেশে এক কোটি পরিবার কার্ডধারীর মধ্যে প্রতি মাসে কিছু পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। টিসিবির ট্রাকে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এবং মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে না এলে পরবর্তী সময় কার্যক্রমের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।

এছাড়া, সরকারের খাদ্য অধিদপ্তর খোলাবাজারে বা ওএমএস পদ্ধতিতে চাল ও আটা বিক্রি করছে, এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তরও ট্রাকে সাশ্রয়ী দামে পেঁয়াজ, ডিম, আলু ও অন্যান্য কৃষিপণ্য বিক্রি করছে।